পূর্বদেশ ডেস্ক
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিল্টনকে মনোনয়ন না দেওয়ায় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গাংনী বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে ওই আসনে আমজাদ হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়। ওই ঘোষণার পরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি জাবেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মাঠে থেকে সংগঠনকে ধরে রেখেছেন জাবেদ মাসুদ মিল্টন। মামলা, হামলা, নিপীড়নসহ নানা প্রতিকূল অবস্থায়ও তিনি নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। অথচ মাঠে অনুপস্থিত একজনকে হঠাৎ মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এ কারণে তারা মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি তোলেন।
মেহেরপুর-২ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন দাবি করেন, মনোনয়ন বঞ্চিত মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টনের সমর্থক গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়ালসহ তার ক্যাডার বাহিনীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। হামলায় বিএনপির অন্তত ১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বানী ইসরাইল জানান, উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর গাংনীতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি শান্ত করতে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে, চাঁদপুর-৪ আসন ফরিদগঞ্জে মনোনয়ন না পাওয়ায় বিএনপি নেতা এম এ হান্নানের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কে এম এ হান্নানের সমর্থক নেতা – কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে।
সকাল থেকেই ফরিদগঞ্জ পৌর বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হন। সেখানে তারা টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
ওই সময় তারা মনোনয়ন পাওয়া লায়ন মো. হারুনুর রশিদের বিলবোর্ড ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ওই সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে, মাগুরা -২ আসনে ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে মনোনয়ন না দেয়ায় তার নির্বাচনী এলাকা মাগুরার মহম্মদপুর- শালিখা ও সদর উপজেলার চার ইউনিয়নের সমর্থকরা সোমবার রাতেই সেখানে বিক্ষোভ করে। নিতায় রায় চৌধুরীকে অযোগ্য প্রার্থী দাবি করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে তাকে বাদ দিয়ে রবিউল ইসলাম নয়নকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় লায়ন আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা সীতাকুন্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। গুলশানে মনোনয়ন ঘোষণার পর ঘন্টাখানেকের মধ্যেই তার অনুসারী হাজার হাজার সমর্থক রাস্তায় নেমে আসেন। সীতাকুন্ডের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন।
সীতাকুন্ড আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সদস্য লায়ন আসলাম চৌধুরীর নাম আলোচনায় থাকলেও তিনি বাদ পড়েছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি রাজপথে ছিলেন এবং দীর্ঘ ৮ বছরেরও বেশি সময় একাধারে কারাভোগ করেন। ব্যবসায়িকভাবেও বড়ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। তাই তার এবং অনুসারীদের প্রত্যাশা ছিল এই আসনে আসলাম চৌধুরীই বিএনপির মনোনয়ন পাবেন।










