নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায়ে বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ায় আওয়ামী লীগ আমলে ভোটে কারচুপির প্রমাণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার দুপুরে শপথ গ্রহণের পর শাহাদাতকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এমন প্রতিক্রিয়া দেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু দেশটাকেই ‘ধ্বংস’ করেনি, ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে প্রতিটি নির্বাচনকে তারা তাদের মত করে সাজিয়েছিল, প্রতিটি নির্বাচনের ফল কেড়ে নিয়েছিল। খবর বিডিনিউজের।
চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনপ্রিয় নেতা প্রতিযোগিতা করে ‘জিতেছিলেন’। কিন্তু আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্টরা’ বলপ্রয়োগ করে জনগণের ফলাফল কেড়ে নিয়েছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনালকে তারা পূর্বের নির্বাচনকে বাতিল করে শাহাদাতকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছে। সেই সাথে অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাই তারা আদালতের রায়কে মেনে নিয়ে তাকে চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে শপথ পড়িয়েছেন।
আওয়ামী লীগ যেন আর ফিরে আসতে না পারে, সে জন্য জনগণের দুর্বার প্রতিরোধের আহŸানও জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এবং আগামী দিনের নির্বাচনগুলো যেন অবাধ সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হয় আমরা সেই প্রত্যাশা করছি।
পরে সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতি দ্রæত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যত দেরি করবেন, তত হাসিনারা আবার ফিরে আসবে। তাই এখনো বলছি, আবারও বলছি, অতি দ্রæত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন।
এসময় একজন উপদেষ্টার বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি বলেছেন, রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা আশা করি না, এই মাপের মানুষ এ ধরনের কথা বলবেন।
তিনি বলেন, আমরা রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করি না। আমরা বাংলাদেশকে হাসিনামুক্ত করার জন্য কাজ করেছি। জীবন দিয়েছি, প্রাণ দিয়েছি, এখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা দ্রুত করছি।
তিনি বলেন, আমরা একটা ভয়াবহ দানবের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি। বুকের ওপর থেকে পাথর গেছে। কিন্তু পাথর গেলেও এখনো কিন্তু স্বস্তি নেই। কোথায় যেন আটকে আছি। আমাদের জনগণের সরকার এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
তিনি বলেন, আপনার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। এই সুনাম রক্ষা করাই এখন সবচেয়ে বড় কাজ। যে দায়িত্ব আপনার ওপর পড়েছে, সেই দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবেন। অর্থাৎ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত পার্লামেন্ট এবং সরকারের কাছে ক্ষমতা দিতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবারও চক্রান্ত করে বিএনপিকে বাদ দিয়ে কিছু করার চেষ্টা করতে যাবেন না। এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। একবার বিরাজনীতিকরণের মাইনাস টু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আবারও ওই রাস্তায় যাওয়ার কথা কেউ চিন্তা করবেন না।
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এমন কিছু করবেন না, যাতে দলের বিরুদ্ধে কেউ আঙুল তুলে কথা বলতে পারে। এটা করবেন না, করতে দেবেন না।