বাড়বে উৎপাদন কমবে আমদানি

34

উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ৬ উপজেলার ৭০০টি বাগানে লেবু জাতীয় ফলের আবাদ করা হয়েছে। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে মাল্টা, বাতাবি লেবু, জাম্বুরা, কমলা, এলাচি লেবু, কলম্বো লেবু ও আদাজামিরসহ নানা ধরনের লেবুজাতীয় ফল। ২০১৯ সালের মার্চে গৃহীত প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে লেবু ফলের আবাদ করা হয়েছে। ২০২৩ সালে বাগানের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রামসহ সারাদেশের জন্য নেয়া ১২৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উৎপাদন ২০ শতাংশ বাড়বে। পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতাও কমবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার এ জাতীয় ফল আমদানি করতে হয়।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মালটা ও কমলাসহ লেবু জাতীয় ফলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাঁশখালী উপজেলায় ইতোমধ্যে ৯০টি বাগানে এসব ফলের আবাদ করা হয়েছে। এ বছর আরও ৩০টি বাগানে চারা লাগানো হবে। প্রতি শতকে ৩টি করে চারা বিতরণ করা হয়েছে কৃষকদের মধ্যে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এ প্রকল্পের আওতায় ৭৭ হেক্টর জমিতে লেবু জাতীয় ফলের আবাদ করা হয়েছে। মিরসরাই উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৩ একর জমিতে। ফটিকছড়িতে এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৫০টি বাগানে লেবু জাতীয় ফলের আবাদ করা হয়েছে। রাউজান উপজেলায় এ প্রকল্পের আওতায় ১২০টি বাগানে লেবু জাতীয় বিভিন্ন ফলের আবাদ করা হয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলায় এ প্রকল্পের আওতায় মোট ১৫০ বাগানে লেবু জাতীয় ফলের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতকের ৩৮টি, ১০ শতকের ৩৬টি, ২০ শতকের ৩৬টি, ৩০ শতকের ১২টি, ৪০ শতকের ১২টি, ৫০ শতকের ৫টি, এক একরের ৪টি বাগানে লেবু জাতীয় ফলের চাষ করা হয়েছে। পুরতন চারটি বাগানেও উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় পূর্বদেশকে বলেন, সাতকানিয়া উপজেলায় লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির আওতায় প্রায় ১৫০টি বাগানে এ জাতীয় ফসলের আবাদ করা হয়েছে। তবে এসব বাগানের অধিকাংশই মালটা, থাইল্যান্ডি কমলা ও জাম্বুরা ফলের বাগান। আমরা কৃষকদের উৎসাহ প্রদান করতে কয়েকজন কৃষককে প্রদর্শনীর আওয়ায় এনেছি। উৎপাদন বিষয়টি এখনও বলা যাচ্ছে না। কারণ একটি বাগানে ফল ধরতে দুই থেকে তিন বছর লেগে যায়।
কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নাছির উদ্দিন পূর্বদেশকে বলেন, সারাদেশে লেবু জাতীয় ফল (মাল্টা, কমলা, বাতাবি লেবু, জাম্বুরা) চাহিদা অনুপাতে উৎপাদন কম থাকায় প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তাই লেবু জাতীয় ফলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকার এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের ৬ উপজেলায় লেবু জাতীয় ফলের বাগান বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০০টি বাগানে লেবু জাতীয় ফলের আবাদ করা হয়েছে। প্রকল্প শেষ হওয়া নাগাদ আবাদ আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, সারাদেশে মোট ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফলের আবাদ হয়। এর মধ্যে লেবু জাতীয় ফলের আবাদ হয় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। এ প্রকল্পের আওতায় ৭ বিভাগের ৩০ জেলার ১২৩টি উপজেলায় লেবু জাতীয় ফলের আবাদ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে শুরু হওয়া এ প্রকল্প ২০২৩ সাল নাগাদ বাস্তবায়িত হলে লেবু জাতীয় ফলের উৎপাদন বাড়বে প্রায় ২০ শতাংশ। যেহেতু আমাদের নিজস্ব বাগানে মালটা ও কমলার উৎপাদিত হবে। পাশাপাশি কমবে আমদানি নির্ভরতা।