বাসস-একুশে পত্রিকা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

135

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দশটি বিশেষ উদ্যোগের প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক একুশে পত্রিকার সঙ্গে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এবং একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধুর দশটি বিশেষ উদ্যোগ সব নাগরিকের জন্য, শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য নয় বা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর অনুসারীদের জন্য নয়। এটা আমরা যারা নাগরিক আছি, সবার জন্য এই বিশেষ দশটি উদ্যোগ। এই কথাটি আমাদেরকে অন্তরে ধারণ করতে হবে। তাহলে আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকলে সেটা দূর হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এই দশটি উদ্যোগ একেবারে সময়োপযোগী। এর ফলে যারা উপকৃত হবে, তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি হবে। দশটি উদ্যোগের সুফল এখন আমরা পাচ্ছি। দেশে এখন শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে, মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, শিশুমৃত্যু হার কমেছে, দারিদ্র্য কমেছে। ২০০৬ সালে শতকরা ৪২ জন দরিদ্র ছিল, এখন সেটা ২০-এ নেমে এসেছে। দশটি উদ্যোগের ফলে সাধারণ মানুষ যে সুফল পেয়েছে, এসব গণমাধ্যমে তুলে ধরা সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
মেয়র বলেন, দশটি বিশেষ উদ্যোগের প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য আজকে যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হচ্ছে, এটা একুশে পত্রিকার প্রতি যে আস্থা-বিশ্বাস এটার প্রতিফলন। এখন একুশে পত্রিকার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে।
সভাপতির বক্তব্যে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নৈতিক দায়িত্ব থেকে দশটি বিশেষ উদ্যোগের প্রচার করা উচিত। আমাদের মধ্যে একটা ধারণা আছে, সরকারের উন্নয়ন নিয়ে লেখা মানে দালালি করা। অথচ উন্নয়ন হচ্ছে, এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এই দেশটি আমাদের। আমরা চিরজীবন থাকবো না, আগামী প্রজন্ম আসবে। তাকে কেন আমি উন্নয়নের কথা বলবো না?
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বললেন, আমরা অনেকেই হাসাহাসি করেছি। বিদ্যুৎ চলে গেলে বলা হতো, ডিজিটাল বিদ্যুৎ চলে গেল। ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়লেন তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। ২০০৮ এর নির্বাচনের পর যখন আবার ক্ষমতায় আসলেন, তখন দেশে বিদ্যুৎ উৎপান ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। এক হাজার মেগাওয়াট নাই। আজকে লোডশেডিং নেই বললেই চলে, সঞ্চালন লাইনের কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কার্যকর কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করেছে। বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রীর দশটি উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ডা. এ.কিউ.এম.সিরাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি কাজী আবুল মনসুর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, চসিকের প্রাক্তন কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু প্রমুখ।
সভার শুরুতে বাসস এর বিশেষ সংবাদদাতা ও প্রধানমন্ত্রীর দশটি বিশেষ উদ্যোগের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মাহফুজা জেসমিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দশটি বিশেষ উদ্যোগ কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ তুলে ধরেন।
উপস্থিত ছিলেন একুশে পত্রিকার সম্পাদকীয় উপদেষ্টা নজরুল কবির দীপু, এইচ এম জামাল উদ্দিন, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা মো. নাছির উদ্দিন, বাসসের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি রোটারিয়ান দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ অফিসার মহিউদ্দিন জুয়েল, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শামসুদ্দিন ইলিয়াছ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান অনুপম শীল, সময় টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার পার্থ প্রতিম বিশ্বাস, দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার শৈবাল আচায্য, যুবলীগ নেতা সংগঠক হেলাল উদ্দিন, মহানগর বংগবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সভাপতি মো. সাজ্জাত হোসেন, জুনিয়র চেম্বারের পরিচালক টিপু সুলতান সিকদার, ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম, সংগঠক মোস্তফা নুর বিপ্লব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শুক্রবার রাতে একুশে পত্রিকা কার্যালয়ে সম্পাদক ও প্রতিবেদকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দশটি উদ্যোগের ওপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় একুশে পত্রিকার সম্পাদক আজাদ তালুকদারের নেতৃত্বে পত্রিকাটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- সম্পাদকীয় উপদেষ্টা নজরুল কবির দীপু, রেহানা বেগম রানু, এইচ এম জামাল উদ্দিন, গ্রাফিক্স সম্পাদক আবুল কালাম মিন্টু, সিনিয়র রিপোর্টার হিমাদ্রী রাহা, সিনিয়র রিপোর্টার শরীফুল রুকন, সহ সম্পাদক আবদুল আলী, ভিডিও এডিটর নিউটন পাল, আইটি ইনচার্জ রিদুয়ানুল হক মুন্না, রিপোর্টার জিন্নাত আইয়ুব।
এতে বাসসের চট্টগ্রাম ব্যুরো ইনচার্জ মিয়া মো. আরিফ ও স্টাফ রিপোর্টার জিগারুল ইসলাম জিগার এবং সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের প্রেস সমন্বয়ক উজ্জ্বল দত্ত অংশগ্রহণ করেন।