বালু নিয়ে খেলছিল শিশুরা ধসে পড়ল পাহাড়

4

আনোয়ারা প্রতিনিধি

আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার কেইপিজেড এলাকায় পাহাড় ধসে ২ শিশু নিহত এবং আরও ২ শিশু আহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হল আব্দুর রহিমের পুত্র মো. রোহান (১২) ও ইমরান হোসেনের পুত্র মিসবাহ (১২)। এছাড়া আহতরা হল মোস্তাক মিয়ার পুত্র সিয়াম (১০) ও আবুল কাশেমের পুত্র সিফাত (৯)। হতাহত সবার বাড়ি বৈরাগ ইউনিয়নের বৈরাগ পশ্চিম পাড়ায়। আহতরা শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
হতাহতদের বন্ধু ইমরান (১২) বলেছে, স্কুল বন্ধ থাকায় তারা ৯ বন্ধু কেইপিজেডে ঘুরতে যায়। এক পর্যায়ে তারা পাহাড়ের পাশের একটি গর্তে বালু নিয়ে খেলছিল। এ সময় হঠাৎ তাদের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। ইমরানসহ অন্যরা একজনকে উদ্বার করতে পারলেও বাকিদের পারেনি। তারা দৌঁড়ে আশপাশের লোকজনকে ডেকে নিয়ে আসে।
স্থানীয়রা জানান, এক সময় ঘটনাস্থল থেকে পাহাড় কেটে পাশ্ববর্তী একটি খেলার মাঠ ভরাট করেছিল কেইপিজেড। ফলে পাহাড়গুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে বুধবার বৃষ্টি হলে এগুলো আরও নড়বড়ে হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ এই পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ধসে পড়া পাহাড়ের মাটিচাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই ২ জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা হতাহতদের উদ্ধার করে প্রথমে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ২ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত ২ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহত শিশুরা সবাই বৈরাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, সম্প্রতি সরকার কেইপিজেডকে জমির দলিল হস্তান্তরের পর বেপরোয়াভাবে পাহাড় কাটা শুরু করে। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কেইপিজেড পাহাড়কাটা বন্ধ করলেও স্থায়ীভাবে তা বন্ধ হয়নি।
নিহত মিজবাহর চাচা শাহিন ও রোহানের চাচা শফি আলম বলেন, হতাহতরা সবাই বৈরাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কেইপিজেডে খেলতে যায় তারা। সেখানে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাশে খেলার সময় হঠাৎ পাহাড়ের একটি অংশ ভেঙে পড়ে তাদের ওপর। বেঁচে যাওয়াদের ২ জন সেখান থেকে দৌড়ে গিয়ে লোকজনকে খবর দিলে তারা গিয়ে মাটিচাপা পড়াদের উদ্ধার করেন।
কেইপিজেড’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, আমরা অনুমতি নিয়ে পাহাড় কাটছি। যে জায়গায় দুর্ঘটনা, সেখানে এখন আমরা পাহাড় কাটছি না।
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, কেইপিজেড’র পাহাড় ধসে আহত ৪ জন শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে ২ জন মারা যায়। আহত ২ জনকে গুরুতর অবস্থায় চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আনোয়ারা থানার ওসি মনির হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বজনরা আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে আসায় নিহত শিশুদের ময়নাতদন্ত করা হয়নি।