বারইপাড়া খাল খনন শেষ হলে জলাবদ্ধতা কমবে

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল রবিবার পূর্ব ষোলশহর জীবন মিস্ত্রি সড়কে প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শনে যান মেয়র। এ সময় তিনি বলেন, বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প সমাপ্ত হলে নগরীর জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে আসবে, এ কারণে এ প্রকল্পকাজ শেষ করতে আমি বদ্ধপরিকর। প্রকল্পের কাজের মান ভালো হতে হবে। বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প এলাকা অত্যন্ত নয়নাভিরাম হওয়ায় এখানে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত একটা পর্যটন স্পট ইনশাআল্লাহ আমি করব। শহরের মধ্যে এ ধরনের পর্যটন স্পট হলে নাগরিকরা সুস্থ বিনোদনের একটি জায়গা পাবেন এবং এলাকায়ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।
মেয়র বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি পূর্ব বাকলিয়াতে কিছু মানুষ এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে নানা রকম বাধা দিচ্ছেন। আমি তাদেরকে বলতে চাই, যদি কোন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে অন্তরায় হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা কোন ড্রয়িং রুম থেকে আসি নাই, আমরা রাজপথ থেকেই এসেছি। কাজেই এখানে কোন মাস্তানি-সন্ত্রাসী করে জনদুর্ভোগ করা হলে, তা বরদাস্ত করা হবে না।
ক্রাশ প্রোগ্রাম ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন : এর আগে গতকাল রবিবার সকালে নগরীর বাকলিয়া এলাকার কালামিয়া বাজার থেকে মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মেয়র। এ সময় ১৭ ও ১৮ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কে হেঁটে হেঁটে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, সড়ক সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মেয়র।মেয়র দুটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের হাজিরা নেন এবং স্থানীয়দের কাছে কাজের পারফরম্যান্স জানতে চান।
পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের সতর্ক করে মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মরতদের আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই, অভিযোগ আছে পরিচ্ছন্ন বিভাগের অনেকে কাজ না করে মাছের ব্যবসাসহ বিভিন্ন পার্টটাইম ব্যবসা করছে। আমি দেখছি কারা কারা ফাঁকি দিচ্ছে। এখানে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সে দায়িত্ব¡ আপনারা সততার সাথে, ঈমানদারিত্বের সাথে পালন করবেন। অন্যথায় আমি আবারও বলছি অনেকের চাকরি নাও থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এখানকার এলাকাবাসী কোন কমপ্লেন আপনাদের বিরুদ্ধে যদি দেয়, আপনারা মশার স্প্রে দিচ্ছেন না, ক্লিনিং করছেন না, আপনারা অনিয়মিত আছেন, তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। আর যদি আপনারা ডিসিপ্লিনের সাথে ঈমানদারিত্বের সাথে সততার সাথে কাজ করেন আপনাদেরকে আমি পুরস্কৃত করবো ইনশাল্লাহ। মশক নিধন অভিযান আরও জোরদার হবে। ওষুধের গুণগতমান ল্যাব টেস্ট করা হবে। এ বিষয়ে কোন ধরনের আপস করবো না। জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হচ্ছে নালানর্দমা অপরিষ্কার থাকা। এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা ভাঙা দেখেছি। মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। যেসব রাস্তাঘাট জনদুর্ভোগের কারণ হচ্ছে, সেগুলো দ্রæত মেরামত করা হবে।
নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে জনগণের সহযোগিতা কামনা করে মেয়র বলেন, একটি খাল দেখলাম, এটা মনে হচ্ছে একটা ডাস্টবিনে পরিণত হয়ে গেছে। সমস্ত ডাস্টবিনের ময়লা এখানে ফেলা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটা দুর্ভাগ্যের বিষয়। আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। আমাদের নিজ দায়িত্বে¡ এই শহরকে আমার শহর মনে করে ময়লা পরিষ্কার করতে হবে। আমরা কোন খালকে ডাস্টবিন করতে চাই না। না হলে আরো একটা ডাস্টবিন আমি করে দিব ইনশাআল্লাহ। ওই ডাস্টবিনে আপনারা ময়লা ফেলবেন। এ শহর আমার একার না, সবার। তাই আমাদের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। চট্টগ্রামের একজন নাগরিক হিসেবে হোল্ডিং ট্যাক্স আপনাকে দিতে হবে।
সমন্বয় ছাড়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলবে না : চসিককে অবহিত না করে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে নগরবাসীকে ভোগান্তিতে না ফেলতে সেবা সংস্থাগুলোকে আহŸান জানিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে সিডিএ, ওয়াসা, টিঅ্যান্ডটি, পিডিবি, কর্ণফুলী গ্যাস, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সব সেবাদানকারী সংস্থাকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য বলেন মেয়র।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন রাস্তা করার পর পরই দেখা যায় অন্য সংস্থা রাস্তা খুঁড়ে ফেলে জনভোগান্তি সৃষ্টি করছে। সমন্বয় ছাড়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা চলবে না। উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে সেবাদানকারী সংস্থাগুলোকে চসিকের সাথে সমন্বয় করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুুল আলম, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, মেয়রের রাজনৈতিক সচিব মারুফুল হক চৌধুরী মারুফসহ প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।