মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান
বান্দরবানে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়া এলাকায় বান্দরবান-সুয়ালক-লামা বাইপাস সড়কের তিনটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে গেলো শুক্রবার থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। হেডম্যান পাড়া এলাকায় সড়কের তিনটি জায়গা বড় ধরনের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে এসেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এই সড়কটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। তিন বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি কার্পেটিং করা হলেও এরপর আর কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। টানা বৃষ্টিতে সড়কের অবস্থা এতটাই ভয়াবহ হয়েছে যে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় তিন দিন ধরে জুমচাষিরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না। এদিকে বড় গাড়িগুলোও সড়ক ভাঙনের কারণে এলাকায় প্রবেশ করতে না পারায় পণ্য সংগ্রহ করতে পারছে না, এমনটাই জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। পুনর্বাসন ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা হেবল ত্রিপুরা বলেন, দুই বছর আগে সড়কটি পাকাকরণ করা হলেও বর্তমানে এটি বেহাল দশায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে মাত্র। এখনই যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেছে।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন পাহাড়ি বাসিন্দা। তারা জানান, প্রতিবছর বর্ষায় সড়কের মাটি ধসে পড়ে। এবার বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে সড়কের দুই পাশে ধস নামায় শুক্রবার থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয়রা দ্রুত সড়কটি সংস্কার করে যান চলাচল স্বাভাবিক করার আহ্বান জানান।
টংকাবতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মায়াং ম্রো প্রদীপ বলেন, গেলো বছর থেকেই সড়কটি একটু একটু করে ধসে পড়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের জানানো হলেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এবারের বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই পুরো যোগাযোগ পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন বলেন, হেডম্যান পাড়ায় সড়কের তিনটি জায়গায় বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীকে সরেজমিন পরিদর্শন করে বাজেট প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রধান কার্যালয়ে বাজেট বরাদ্দের আবেদন করা হবে। তিনি আরও জানান, যদি বড় ধরনের বরাদ্দ পাওয়া যায়, তাহলে সড়কের দুই পাশে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।