বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানে চুরির অপবাদে দুই যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে বান্দরবান আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত রবিবার বান্দরবান সদরের গোয়ালিয়াখোলা রোয়াজাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স¤প্রতি বান্দরবান সদর উপজেলার রোয়াজাপাড়ায় কয়েকজন ব্যক্তি তাজউদ্দিন ও উহ্লামং নামে দুই যুবককে চুরির অভিযোগে আটক করে। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার তাদেরকে একটি চায়ের দোকানে লাঠি দিয়ে পেটানোসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। শুধু তাই নয় এক পর্যায়ে মেম্বার নিজেই তাদেরকে প্লাস দিয়ে নক তোলার চেষ্টা করেন। এই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়।ভুক্তভোগীদের পরিবারের অভিযোগ, কোনো প্রমাণ ছাড়াই মেম্বার শহীদুলসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি নিজেরা বিচারের নামে তাদেরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে। তারা বিচার করার পরও থানার মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। তারা চুরি করলে তার জন্য আইন-আদালত আছে। আইন আদালতে তুলে দিতে পারতো, কিন্তু তা না করে বর্বর নির্যাতন করেছে। এর বিচার চাই।
মারধরের বিষয়ে মেম্বার শহিদুল ইসলাম বলেন, তাজউদ্দিন ও উহ্লামং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে। স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার তাদের বিচার করা হলেও তারা অপরাধ কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। রবিবার চুরির ঘটনায় তাদেরকে স্থানীয়রা ধরে। তারা যেন আর এ ধরনের কাজ না করে, সেজন্য মারধর করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তবে নক তোলার বিষয়টি মিথ্যা, তাদের শুধুমাত্র ভয় দেখানো হয়েছিল।
এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগীর পিতা আহমদ হোসেন বাদী হয়ে বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শহিদুল ইসলামকে (৩৬) প্রধান আসামি করে ৭ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন ইছহাক (৫৮), শহিদুল ইসলাম (২৮), শাহ আলম (৬০), ওসমান (৪৫), সুজন (৩০) ও জিকু (২১)। তারা সবাই সদরের গোয়ালিয়াখোলার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
বান্দরবান সদর থানার এসআই বোরহান উদ্দিন বলেন, চুরির অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে মামলার পর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারধরটা অতিরিক্ত হয়ে গেছে, এভাবে মারধর করাটা ঠিক হয়নি।
মামলার আইনজীবী এ্যাডভোকেট আনোয়ার বলেন, চুরির অপবাদে দুই ব্যক্তিকে প্রথমে লাঠি ও পরে প্লাস দিয়ে নকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে স্থানীয় এক মেম্বারসহ বেশ কয়েকজন। সভ্য সমাজে এ ধরনের নির্যাতন কোনভাবেই কাম্য নয়। তারা চুরির করলেও, তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে কিন্তু এমন নির্যাতন কনে? এ ঘটনায় বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে।











