রাউজান প্রতিনিধি
২১ বছর আগের আলোচিত সোহেল হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। সোহেল হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি ফরিদ খান গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাদী খতিজা বেগম এবং হত্যাকান্ডের শিকার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাউজান পৌরসভার মুন্সিরঘাটাস্থ একটি সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হত্যাকান্ডের শিকার সোহেলের পিতা ও রাউজান উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের মইশকরম গ্রামের বাসিন্দা নুরুল কবির।
তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাত সড়ে ৮টায় ফরিদ খান আমার ছেলেকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে। পরে নিখোঁজের ১৪ দিন পর হালদা নদীর মগদাই স্লুইসগেট থেকে মস্তকবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার পকেটে প্লাস্টিক মোড়ানো দুটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তার মা খতিজা বেগমসহ স্বজনেরা মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে। মো. আলী, ফরিদ খান, আনোয়ার হোসেন, শহর বানু, হোসনে আরা বেগম, মো. রফিকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করা হয়। দীর্ঘদিন পর গুন্নু মিয়া খানের ছেলে ফরিদ খান আত্মগোপনে থেকে ৫ আগস্ট পরবর্তী দেশে ফিরলে গত মঙ্গলবার ২৮ এপ্রিল স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওয়ারেন্ট থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।’ তার গ্রেপ্তারকে ঘিরে বিভিন্ন মাধ্যমে নিহত সোহেলের পরিবারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ছেলে হত্যার বিবরণ দিয়ে নুরুল কবির বলেন, ‘প্রথমে জবাই করে নির্মমভাবে মস্তক আলাদা করা হয়েছিল, এরপর লাশের সাথে ৩টি তেলের টিন বেঁধে লাশ ফেলে দেওয়া হয় হালদা নদীতে, দুই সপ্তাহ পর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল।’
সোহেলের মা খাতিজা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের লাশ পাওয়ার ২১ বছর পরও মস্তক পাওয়া যায়নি। ছেলেকে দাফনের সময় শেষ বারের মতো চেহেরাটা দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমার মতো একজন হতভাগ্য মায়ের। আমি সকল আসামির ফাঁসি চাই। এখন ফরিদ খান গ্রেপ্তার হওয়ার পর আমাকেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতা ভুগছি।’
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হত্যাকান্ডের শিকার সোহেলে মা খতিজা বেগম, দুই বোন শারমিন আকতার আঁখি ও ফারজানা আকতার রবি এবং তাদের ছোট ভাই ওমার ফারুক জুয়েল, স্থানীয় আবু সৈয়দ, বাবুল, বাবুল খান প্রমুখ।