বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তথ্য সংগ্রহ শুরু মার্চে

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হবে মার্চে। আগামী ২ মার্চ চলতি বছরের হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পরপরই এ কর্মসূচি শুরু করতে চায় ইসি। আগামী বছরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি ২০২৫ উপলক্ষে তথ্য সংগ্রহ ও রেজিস্ট্রেশনে চট্টগ্রামে দুটি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এক বছরে বিদ্যমান ভোটারের ৩ শতাংশ ও তিন বছরে ৭.৫ শতাংশ ভোটার নিবন্ধনের সম্ভাব্য হার নির্ধারণ করেছে। তবে নির্বাচন কমিশন সূত্রগুলো বলছে, এক বছরের ভোটার তথ্য ও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে ২০২৬ সালের ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে চাইছে ইসি।
এদিকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় করতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে আসছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এ এম. নাছির উদ্দিন। তিনি এদিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে আসলেও পরদিন (৩০ ডিসেম্বর) সকল স্তরের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সাথে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিবেন।
সিইসির এই আগমনকে ঘিরে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যস্ততা বেড়েছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির তথ্য সংগ্রহ ও রেজিস্ট্রেশনে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। চট্টগ্রামের ২১টি উপজেলা ও থানা নির্বাচন এলাকায় বর্তমান ভোটার, নিবন্ধনে কত দিন সময় লাগবে,কতটি টিম কাজ করবে, বিশেষ ফরম বাছাইয়ে কত সময় লাগতে পারে, উপজেলা থেকে উপজেলায় গমনের সময় নির্ধারণ করেই এ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে এক বছরে ভোটার নিবন্ধনে ১৮৫ দিন ও তিন বছর ভোটার নিবন্ধনে ৪৬৩ দিন সময় ধরা হয়েছে।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুযায়ী চট্টগ্রামে বর্তমানে ৬৪ লক্ষ ৮৬ হাজার ৫০৯ জন ভোটার আছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৪ লক্ষ ৯৪০ জন, মহিলা ভোটার ৩০ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫০১ জন ও হিজড়া ভোটার ৬৮ জন। বিদ্যমান এই ভোটারের তিন শতাংশ হারে এক বছরে ভোটার নিবন্ধন হলে এক লক্ষ ৯৪ হাজার ৫৯৫ ও তিন বছরে ৭.৫ শতাংশ হারে সম্ভাব্য ভোটার নিবন্ধন হবে চার লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৮৮ জন।
নির্বাচন কমিশন জানান, আগামী বছরের ২ মার্চ ২০২৪ সালের হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এর আগে আগামী ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে হালনাগাদকৃত খসড়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও মাঠ পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারের নিকট প্রস্তুতকৃত ভোটার তালিকার লিঙ্ক প্রেরণ করতে হবে। ২ জানুয়ারি হালনাগাদকৃত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ১৭ জানুয়ারি দাবি, আপত্তি ও সংশোধনের জন্য আবেদন দাখিলের শেষ তারিখ, ৩০ জানুয়ারি সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দাবি, আপত্তি ও সংশোধনীর জন্য দাখিলকৃত আবেদনসমূহ নিষ্পত্তি, ৯ ফেব্রুয়ারি দাবি, আপত্তি ও সংশোধনীর জন্য দাখিলকৃত আবেদনের উপরে গৃহীত সিদ্ধান্ত সন্নিবেশনের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী বছরের ২ মার্চ ২০২৪ সালের চ‚ড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই তথ্য অনুযায়ী তারা ২০২৬ সালের ২ মার্চের চ‚ড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকায় ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
গত ২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ছয় মাসের মতো সময় লাগতে পারে। কবে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে ইসি সচিবালয় থেকে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২ মার্চের পর ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজ শুরু হতে পারে।’