দেশের বাজার ব্যবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে এখনো স্থিতিশীলতা আসেনি। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন হতে দেখা যায়নি। তবে সয়াবিন তেল এবং চাল নিয়ে চালবাজি এখনো থামাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বাজার ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সকল প্রকার ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট এবং গুদামজাতকারীদের দমন করতে হবে। চাঁদাবাজি দেশ হতে উৎখাত করতে হবে। ঈদের পর বাজার ব্যবস্থার হালচাল নিয়ে দৈনিক পূর্বদেশের এক প্রতিবেদন হতে জানা যায়, ঈদের রেশ কাটতে না কাটতে বাজারগুলোতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেড়েছে সবজির দাম। তবে কমেছে সব ধরনের মাংসের দাম। এছাড়া মাছ ও মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে। গতকাল শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগপণ্যের এ চিত্র পাওয়া যায়।
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষ হলেও বাজারে এখনও ক্রেতার আনাগোনা ছিল কম। তবে দোকানপাট সব খোলা আছে। পণ্যের সরবরাহও স্বাভাবিক দেখা গেছে। বাজারে খুচরা পর্যায়ে বেগুন, ঢেঁড়স, পটল প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁয়াজফুল ৩০ টাকা, কচুরলতি ১০০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া খুচরা পর্যায়ে লেবু আকারভেদে ডজন ১২০ থেকে ২২০ টাকা, শসা প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। লাল শাক, লাউ শাক, কলমি শাকসহ বিভিন্ন ধরনের শাক ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখনও শীতকালীন সবজি মিলছে প্রচুর পরিমাণে। বাঁধাকপি ও ফুলকপির দাম প্রতিকেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন ধরনের মাংসের দাম কমে আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ব্রয়লার মুরগি ৫০ টাকা কমে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯৫ টাকায়। কক মুরগি ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৫৬০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একইভাবে বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১১৫ থেকে ১৩০ টাকা, সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। মাছের মধ্যে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০ থেকে ৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বেলে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৩০০, কালিবাউশ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, কাঁচকি ৬০০ টাকা, কই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, সরপুঁটি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, রূপচাঁদা ৫৫০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে মুদির দোকানে পেঁয়াজের দাম ক্রেতার নাগালের মধ্যে আছে। মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৪০ টাকা এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি সাদা আলু বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা, লাল আলু ৩০ টাকায়। নতুন বগুড়ার আলু ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া নতুন দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হয়েছে। মুদিপণ্যের মধ্যে ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৮৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক লিটার বোতল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা, দুই লিটার বোতল ৩৪৮ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকা, পাম সুপার ১৬০ টাকা, সরিষার তেল খোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৯০ টাকায়। বিরাজ করছে চালের বাজারে অস্থিরতা। চাল এবং সয়াবিন তেলের সিন্ডিকেটের দিকে নজর দেয়া সংশ্লিষ্টদের খুবই জরুরি।