বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ছে, কমছে দাম

2

মনিরুল ইসলাম মুন্না

নগরীর বাজারগুলোতে ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের সবজি। আর সরবরাহ বাড়তে থাকায় এসব সবজির দাম এখন নিম্নমুখি। এর মধ্যে রয়েছে কাকরোল, কাঁচা মরিচ, গাজর, শিম, মিষ্টি কুমড়া ও পটল। অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সবজির দাম কমায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
গতকাল শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
দেখা গেছে, ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে ছয়টি সবজির দাম। এর মধ্যে ১০ টাকা কমে করলা ১৩০ টাকা, ৪০ টাকা কমে কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, ২০ টাকা কমে গাজর ১৬০ টাকা, ৪০ টাকা কমে শিম ১৬০ টাকা, ১০ টাকা কমে মিষ্টি কুমড়া ও পটল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা পণ্যের দাম কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা।
রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকার সবজি ক্রেতা মো. সেলিম বলেন, অক্টোবরের শুরুতে সবজির দাম এত বেশি ছিল যে একসঙ্গে দুই প্রকার সবজি কেনা যেতো না। এখনও অনেক সবজির দাম বেশি, তবে কিছু কিছু সবজির দাম কমেছে, এটা আমাদের জন্য স্বস্তির বার্তা। ধীরে ধীরে নাগালের মধ্যে চলে আসছে।
জানা যায়, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ের পর ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রি শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সময়ে কৃষি ওএমএস কার্যক্রম শুরু করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এর মধ্যে ২৪ অক্টোবর ৬টি সেলস সেন্টারে সবজিসহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু করে জেলা প্রশাসন। আবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে গঠিত টাস্কফোর্সও বাজার তদারকি করছে নিয়মিত। উপজেলা পর্যায়েও শুরু হয়েছে কৃষক বাজার। নানামুখি এমন উদ্যোগের চাপ পড়ছে কাঁচাবাজারে। দাম কমেছে সবজির।
এছাড়া অন্যান্য সবজির মধ্যে বরবটি ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ফুলকপি ১৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, মূলা ৮০ টাকা, কচুর ছরা ৬০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা এবং পেঁপে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে পেঁয়াজ জাতভেদে ৯০ থেকে ১১০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আদা ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা দরে।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের ডিম ব্যবসায়ী মো. শাকিল হোসেন বলেন, আমরা একশ ডিম বিক্রি করে ৫ টাকার বেশি লাভ করতে পারি না। সে হিসেব করে আমরা বাজারে ডিম বিক্রি করছি। আর আগের মত ডিমের সরবরাহও কমে গেছে। তাই কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে আমাদের।
অন্যদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংসের দাম। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও ৭৮০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।
মাছের মধ্যে পোয়া ২৬০ টাকা, লইট্টা ২৬০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাস ১৭০ থেকে ২০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাতলা ৪০০ টাকা এবং মৃগেল ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা আব্দুল হাকিম জানান, সামুদ্রিক মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই এখন পুকুরের মাছ বিক্রি হচ্ছে বেশি। সামুদ্রিক মাছ বাজারে সরবরাহ বাড়লে অন্যান্য মাছের দামও কমবে বলে আশা রাখি। তবে শীতের সময়ে মাছের চাহিদা একটু বেশি থাকে, সেক্ষেত্রে সরবরাহের উপর আমাদের নির্ভর করতে হবে। সাগরে মাছ কম পাওয়া গেলে জেলেরা বাড়তি দরে বিক্রি করবে, তা স্বাভাবিক। এছাড়া পুকুরের মাছ বরাবরের মত রয়েছে। দামের কোন পরিবর্তন ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা যায়নি।