পূর্বদেশ ডেস্ক
বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি করার পর এবার সুর অনেকটাই নরম করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন, (বাংলাদেশ নিয়ে) বাজারে কিন্তু অনেক ফেক ভিডিও ঘুরছে। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল সেটিকে কাজে লাগিয়ে আগুন লাগাতে চাইছে। হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়কেই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ভারতের এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম যাতে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট করার সময় সংযম প্রদর্শন করে এবং ফেক নিউজ প্রচার করার ব্যাপারে সতর্ক থাকে, সেই আহবানও জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
এসব মিডিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থান নই, যে (ফেক নিউজ প্রচার করলে) আপনাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করবো, কিংবা অ্যারেস্ট করে নেবো। কিন্তু এটা আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ!
তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের নাম না নিলেও বিজেপির কথাই যে বলতে চেয়েছেন, তা নিয়ে অবশ্য কোনও সন্দেহই নেই।
মমতা ব্যানার্জি ‘ফেক নিউজ’ নিয়ে সতর্ক করলেও বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় যে তিনি উদ্বিগ্ন, তা অবশ্য স্বীকার করেছেন। সেইসঙ্গে বলেছেন, ‘দাঙ্গা কিন্তু হিন্দুরা বাঁধায় না, মুসলিমরাও নয়। শিখ বা খ্রিষ্টানরাও নয়। (সব দেশেই) দাঙ্গা যারা বাঁধায়, তাদের একটাই পরিচয়, তারা সমাজবিরোধী।
তিনি বিধানসভায় আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু (মুসলিম) নেতারা বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কলকাতায় মিছিল ও সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিরস্ত করেছেন, যাতে এটা নিয়ে কোনও ধরনের উত্তেজনা না ছড়ায়। মমতা ব্যানার্জির কথায়, অনেকে হয়তো এটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে (আমাদের রাজ্যেও) দাঙ্গা বাঁধাতে চাইবে। কিন্তু আমরা কখনওই দাঙ্গা চাই না, চাই শান্তি।
দিনকয়েক আগে এই রাজ্য বিধানসভাতেই তিনি মন্তব্য করেছিলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন রুখতে ভারত সরকারকে তিনি বলবেন, যাতে সে দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী (পিসকিপিং ফোর্স) পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।