অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে বলে ভারতের সংবাদমাধ্যমে যে সব খবর আসছে তাকে ‘প্রচন্ডভাবে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা’ মন্তব্য করে এটি মোকাবিলায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন প্রবাসীদের সহায়তা চেয়েছেন।
দেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা ‘রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে হয়েছে, তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে হয়নি’ তুলে ধরে তিনি বলেন, সেসব ঘটনায় সরকার ব্যবস্থা নিলেও ভারতের ‘মিথ্যা প্রচারণায়’ প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও বাদ যাননি।
গতকাল শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অনুরোধ জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, আপনারা খেয়াল করছেন যে গত চার মাসে কী প্রচন্ডভাবে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা সমস্ত পৃথিবীতে চলছে এবং সেটায় পুরোভাবে আছে কিন্তু ভারতের মিডিয়া। খবর বিডিনিউজের।
ভারতের মিডিয়া যে রোল এবং যে এসাইনমেন্টটা নিয়ে আছে সেটা আমরা জানি। তাদের যে রিচ আছে সেটা আমরা জানি এবং তাদের যে বক্তব্য সেগুলো কিন্তু ভারতীয় ডায়াসপোরা পিক আপ করছে, এবং বিভিন্ন দেশে প্রচারণা চালাচ্ছে।
২০২৪ সালে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তার পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। পাশাপাশি এ সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে বলেও বক্তব্য আছে ভারতের তরফে।
একটি হোটেলে সেন্টার ফর এনআরবি আয়োজিত ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয়, আপনাদের (প্রবাসীদের) এখানে একটা ভূমিকা আছে। তাদের অধিকাংশ তথ্য যে মিথ্যা, আমরা সবাই জানি। কিন্তু মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা চলছে। তাদের প্রচারণা দেখলে মনে হয়, এখানে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, হিন্দুদেরকে সমানে কচুকাটা করা হচ্ছে এবং তাদের বাড়িঘর সব লুটপাট করে ফেলা হচ্ছে, এই ধরণের একটা ইমেজ তারা কিন্তু সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে এবং সেটা প্রোপাগেট করছে ভারতের ডায়াসপোরা, সমস্ত পৃথিবীতে।
উপদেষ্টা বলেন, এখানে আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, যেখানে যতটুকু সুযোগ আছে সেখানে এটা যে একটা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচারণা চলছে। কোন বড় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কিছু ঘটনা ঘটার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যদি দশটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে আটটা মুসলমানের বাড়িতে। সেটা কিন্তু বলা হচ্ছে না।
বলা হচ্ছে শুধু হিন্দুর বাড়ি। যেটা তারা রাজনৈতিকভাবে, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে হয়েছে। তাদের কিন্তু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে হয়নি। কিন্তু সেটা প্রচারণা চালানো হয়েছে, প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে দুইটা হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।