স্পোর্টস ডেস্ক
নাজমুল হোসেন শান্তর রিভার্স সুইপেই কি সর্বনাশ! শেষদিনে তিনি আউট হয়ে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। এর পরিণতিতে হারতেও হলো বাংলাদেশকে। প্রায় তিনদিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও শেষ দুই দিনের খেলায় হেরে গেছে তারা। কারও কারও কাছে ঘটনাটা হয়তো অবিশ্বাস্য হয়ে থাকবে। কানপুরে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। ভারত নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি ভারতকে।
শেষদিনের শুরুটা চাপ নিয়েই করে বাংলাদেশ। আগের দিন দুই উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। এদিন অন্তত দুই সেশন খেলতে না পারলে যে হার চোখ রাঙাবে, তাও জানা ছিল। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে শুরুটা অবশ্য তত ভালো হয়নি। আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক ফেরেন দ্রুতই। রবীচন্দ্রন অশ্বিন লেগ স্লিপটা রাখেন তার জন্য। ওখানেই ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল। ৮ বল খেলে ২ রান করেছিলেন তিনি। তার বিদায়ের পর বাংলাদেশকে আশা দেখান নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাদমান ইসলাম। এর মধ্যেই প্রথম ওপেনার হিসেবে ভারতের মাটিতে টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি পান সাদমান। রবীন্দ্র জাদেজার প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান শান্ত। ৩৭ বলে ১৯ রান করে আউট হয়ে যান শান্ত। তার সঙ্গে সাদমানের জুটি ছিল ৫৫ রানের। শান্ত আউট হওয়ার পর তিন রান করতে আরও তিনটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আকাশ দীপের বলে শট খেলতে গিয়ে জাসওয়ালের হাতে ক্যাচ দেন সাদমান। রেকর্ড হাফ সেঞ্চুরির পর আর এক রানও যোগ করতে পারেননি তিনি। ১০১ বলে ৫০ রান করেন সাদমান। জাদেজার করা ওভারের প্রথম পাঁচটি বলের চারটিই ছেড়ে দেন লিটন। শেষ বলটিও ছাড়তেই চেয়েছিলেন, কিন্তু লিটনের গ্লাভসে লেগে বল যায় পন্তের হাতে। দেশের বাইরে নিজের শেষ টেস্টে ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি সাকিব আল হাসানও। জাদেজার বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে দুই বলে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরত যান সাকিব। ৪ রান করতেই তিন উইকেট হারিয়ে হারের ভয়ে ভালোভাবেই পড়ে যায় বাংলাদেশ। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই জাসপ্রিত বুমরাহর দুর্দান্ত এক ডেলেভারি মিরাজের ব্যাট ছুঁয়ে আশ্রয় নেয় পন্তের হাতে। তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের অলআউট হওয়াটা ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যাওয়ার আগেই অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ। সেশনের একদম শেষ বলে বুমরাকে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন মুশফিক। তাতে ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে তিন উইকেট নেন অশ্বিন, জাদেজা ও বুমরাহ। তাদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় স্রেফ ৯৫ রানের। এটি তাড়া করতে গিয়ে ভারতও অবশ্য উইকেট হারিয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য কম থাকায় তেমন চাপে পড়েনি তারা। তাইজুলের বলেই চার মেরে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন পন্ত।