হাটহাজারী প্রতিনিধি
জঙ্গি সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধ এবং অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচারের দাবিতে হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে হেফাজত নেতারা রাষ্ট্রদ্রোহীর পক্ষে কথা বলে ভারত এ দেশে উপনিবেশবাদ কায়েম করতে চায় বলে দাবি করেছে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর হাটহাজারী ডাকবাংলো চত্ত¡রে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা শাখা উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উক্ত শাখার সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমী।
উপজেলা হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান সিকদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আসাদুল্লাহ আসাদের যৌথ সঞ্চালনায় উক্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার সভাপতি মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান সিকদার, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম মেহেদী, মাওলানা শফিউল আলম, নূর মোহাম্মদ, মাওলানা হাফেজ আব্দুল মাবুদ, মোরশেদ আলম, মাওলানা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসমাইল, হাফেজ আমিনুল হক, মাওলানা জাহাঙ্গীর জাফরাবাদী, মাওলানা শাহজাহান হাবিবী, আবু তাহের রাজিব মাওলানা হাফেজ মহিউদ্দিন, মো. রাশেদ, মাওলানা ফোরকান আলী, মাওলানা হাফেজ সাইফুল ইসলাম ও মাওলানা মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।
বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, ইসকন একটি আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থী জঙ্গি সংগঠন। সর্বশেষ আদালতের কাজে বাধা প্রদান এবং রাষ্ট্রপক্ষের একজন স্বনামধন্য আইনজীবীকে আদালত প্রাঙ্গনে নির্মমভাবে হত্যা করে তার প্রমাণ দিয়েছে সংগঠনটি। সুতরাং সরকারের প্রতি আমাদের দাবি, এ মুহূর্তে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা এবং আইনজীবী হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
ইসকন শুধু জঙ্গি সংগঠন নয় বরং এটি রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন এমনটা দাবি করে তারা বলেন, তাদের কার্যক্রম দেখে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী নয়। ভিনদেশী এজেন্ডা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠন। স¤প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ওরফে চন্দন ধর একজন সা¤প্রদায়িক, ভূমিদস্যু এবং দেশদ্রোহী। হাটহাজারীর পুন্ডরিক ধামে ধর্মীয় আচার শিখানোর নামে সে শিশু-কিশোরদের যৌন নির্যাতন চালানোর অসংখ্য প্রমাণ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাছাড়া সেখানে পতিত ফ্যাসিস্টের লালিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়েছে মর্মে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তিহ নিশ্চিত করার এবং পুÐরিক ধামে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে ভারতের নিন্দা প্রকাশের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে কাকে গ্রেপ্তার করবে, কাকে ছাড়বে এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। এখানে ভিন্ন কোনো রাষ্ট্র মাথা ঘামানোর অধিকার রাখে না। একজন রাষ্ট্রদ্রোহীর পক্ষে কথা বলে ভারত এ দেশে উপনিবেশবাদ কায়েম করতে চায়।
সমাবেশ শেষে হেফাজত নেতৃবৃন্দ একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি ডাকবাংলো চত্বর থেকে বাসস্ট্যান্ড, কলেজ গেট হয়ে হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে এসে দোয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।