পূর্বদেশ ডেস্ক
গুটিকয়েক পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রপ্তানিমুখী পণ্যে নতুনত্ব আনার এবং নতুন বাজার সৃষ্টির তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এই সময়ের ক‚টনীতি কেবল রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক‚টনীতির পথেও হাঁটতে হবে।
গতকাল রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০২১-২২ প্রদান অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাজার বাড়াতে হবে, রপ্তানি পণ্য বহুমুখী করতে হবে। একটা রপ্তানি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকা যায় না। কারণ একটা পণ্যের চাহিদা চিরদিন সমানভাবে থাকে না। সেটা মাথায় রেখে আরা কোন কোন দেশে কি রপ্তানি করতে পারি, সেভাবে আমাদের নিজেদের একটা অনুসন্ধান চালানো, তাদের সাথে যোগাযোগ করা এবং সেই সুযোগটা তৈরি করতে হবে। আমি যখন কোনো দেশে যাই সেখানকার অ্যাম্বাসেডরদের নিয়ে মিটিং করি। খবর বিডিনিউজের।
আমাদের যেটা নির্দেশ সেটা হচ্ছে, এখনকার কূটনীতি শুধু রাজনৈতিক না, এটা হবে ইকোনমিক, বাণিজ্যিক। কোন দেশে কোনো মার্কেট আছে, কোন দেশে কী চাহিদা আছে, সেটা খুঁজে বের করা। তাদের কাছ থেকে আমরা কোন পণ্য সস্তায় কিনতে পারি, তাদের কাছে আমরা কোন পণ্য রপ্তানি করতে পারি, সেগুলো দেখা। এখন আমাদের ডিপ্লোমেসি হচ্ছে ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি।
সিরামিক, পাটজাত পণ্য, হস্তশিল্প, প্রক্রিয়াজাত পণ্য-খাদ্য, হাতে তৈরি ফাইবার, এবং আইসিটি খাতে রপ্তানি বাড়াতে গবেষণায় জোর দেয়ার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
চলতি অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে বাজেট ছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকা যখন সরকার গঠন করি। এই ১৫ বছরের মধ্যে এতো বড় বাজেট দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছি।
গত অর্থবছরের তুলনায় এবারের বাজেট প্রায় ৪.৬ শতাংশ বড় জানিয়ে তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ণ কর্মসূচি প্রায় ১৩ গুণ বৃদ্ধি করেছি। রপ্তানি আয় ৫ গুণ এবং রেমিটেন্স ৬ গুণের বেশি এসেছে। দারিদ্রের হার কমিয়েছি। যেটা আগে ৪৮.৫ শতাংশ ছিল, সেটা এখন ১৮.৬ ভাগ। যদি কোভিড, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ, এবং ফিলিস্তিনিতে গণহত্যা না হত, তাহলে বিশ্বের অর্থনীতি ভালো থাকত, আমরাও আরো এগিয়ে যেতে পারতাম।
পরিকল্পিতভাবে কাজ করার ফলে মাত্র ১৫ বছরে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ‘উন্নতি সম্ভব হয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবে দেশের অর্থনীতি ‘চাপের মুখে পড়েছে’।
উৎপাদন, রপ্তানি এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়িয়ে অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানান শেখ হাসিনা।
সরকার কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলে যাওয়ার জন্য এটা প্রয়োজন। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।
যুব সমাজকে ব্যবসায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে রপ্তানি ট্রফিগ্রহণে অনেক যুবককে দেখে আমার ভালো লাগল যে, অনেক যুবক ট্রফি হাতে তুলে নিয়েছে। এটাতে আমি একটা আশার আলো দেখি যে, দেশটাই এগিয়ে যাবে আমাদের যুব সমাজ।