গত ২৬ নভেম্বর দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার ২নং পাতায় ৩নং কলামে বাঁশখালীর চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদ দখল হয়নি মর্মে প্রকাশিত প্রতিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাঁশখালীর চন্দ্রপুর, ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসহাব উদ্দিন।
প্রতিবাদপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, বাঁশখালীর চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদটি ১৯২৯ সাল থেকে চন্দ্রপুর শাহী জামে মসজিদ নাম ছিল এবং এলাকার সবাই অবগত। মসজিদটি দখল হয়নি মর্মে উল্লেখ করা হলেও বক্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। প্রকৃত সত্য এই, বাঁশখালী চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদটি বিগত ১৯২৯ সালের ২৬ জুলাই ওয়াকফনামা (দলিল নং: ২৩৬৯) মূলে চন্দ্রপুরের করম আলীর পুত্র বসরত আলী মসজিদের জায়গা দান এবং মসজিদটি স্থাপন করেন। ১৯৭৮ সালে চন্দ্রপুর মৌজা-বিএস ৮৪নং খতিয়ানে দলিল দাতার নামে হাজী বসরত আলী জামে মসজিদের নাম চূড়ান্তলিপি হয়। মসজিদটি ১৯২৯ সাল থেকে চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদ নামে পরিচিত এবং হালসন পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন।
মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা হাজী বসরত আলীর মৃত্যুর পর মসজিদটি তার ওয়ারিশরা সুন্দরভাবে পরিচালনা করে আসছিলেন। বিগত ২০১১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জনৈক দানবীর হামাদ জসিম আল দারবিশ মসজিদটির পুননির্মাণ ও আধুনিকায়নের জন্য সংখ্যানুযায়ী অনুদান অপ্রতুল হওয়ায় হাজী বসরত আলীর ওয়ারিশ বদিওর রহমান ও আমার সার্বিক তত্ত¡াবধানে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করে বর্তমান মসজিদটি আধুনিকায়ন করি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিবাদলিপিটি ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়ন চন্দ্রপুর ৪নং ওয়ার্ডের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে আবদুল কাদের প্রদান করেছেন মর্মে উল্লেখ করা হয়। আবদুল কাদের আওয়ামী লীগের ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়নের সহ-সভাপতি, যিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দীর্ঘ ৯ বছরের অধিক সময় ধরে চন্দ্রপুর হাজী বসরত আলী জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক পদটি বেআইনীভাবে দখল করে রাখেন এবং পরস্পর যোগসাজসে মসজিদের বিভিন্ন দানের টাকা আত্মসাৎ করেন। মিথ্যা প্রতিবাদলিপিতে আমার নামও বিকৃত করা হয়। বিগত আওয়ামী স্বৈরাচারের ১৫ বছরের সুবিধা নিয়ে মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন, পরিবেশ দূষণ, ভূমি দখল, কিশোর গ্যাং তৈরিসহ যাবতীয় অপরাধ করার অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমি ১৯৯৩ সাল থেকে ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়নের বর্তমান ৪নং ওয়ার্ডের ৪ বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসাবে দীর্ঘ ২৩ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। বিগত ২০১৭ ও ২০২২ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখে আসছি। আমি চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, পূর্ব সেন্টার পাড়া হাজী গুনু মিয়া জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা, আমেনা খাতুন ফোরকানিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, হাজীগাঁও বরুমচড়া স্কুল এন্ড কলেজের দাতা সদস্য, চাঁদপুর কাদেরিয়া হোছাইনিয়া রশিদিয়া দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসার দাতা সদস্য, পুকুরিয়া শাহ মজিদিয়া ইসলামী কমপ্লেক্সের উপদেষ্টা, শাহ মজিদিয়া আজমগড়ী ইসলামী কাফেলা বাঁশখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক সহ বিভিন্ন দ্বীনি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত।
বিএনপির ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন দাবি করে মো. আসহাব উদ্দিন বলেন, মিথ্যা প্রতিবাদ লিপিতে ১নং পুকুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদের তার বিরুদ্ধে মসজিদটি দখল করার মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী ও আওয়ামীলীগের দোসর নিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে আবারও বিএনপির পরিচয়ে সরব হয়ে উঠেছি মর্মে উল্লেখ করলেও সে নিজেই আওয়ামী লীগের দোসর ও পদধারী। দীর্ঘ ৯ বছরের অধিক সময় মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ওয়ারিশদের তাড়িয়ে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে, মৃত্যুর হুমকি দিয়ে জবরদখলের মাধ্যমে মসজিদের সাধারণ সম্পাদকের পদটি দখল করে রাখে এবং তার কথিত বাহিনীকে মসজিদের কমিটিতে বিভিন্ন পদে আসিন করে, যারা স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদধারী।
প্রতিবাদ লিপিতে মৃত শফিকুর রহমানের পুত্র মোহাম্মদ জাফরকে ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করা হলেও তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মোহাম্মদ জাফর মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা হাজী বসরত আলীর ওয়ারিশ। আবদুল কাদের গং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিএস রেকর্ডিয় হাজী বসরত আলীর ওয়ারিশদের বিভিন্ন জায়গায় তাদের বাহিনী দিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করে মসজিদ থেকে বিতাড়িত করে। এলাকার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে এই জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় আবদুল কাদের গং উচ্চমহলের প্ররোচনায় আসহাব উদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে বলে উল্লেখ করেন মো. আসহাব উদ্দিন।