বাঁশখালী প্রতিনিধি
বাঁশখালীতে ৫ সন্তান নিয়ে মোরশেদা বেগম নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী উধাও হয়ে গেছেন। পরকিয়া প্রেমের কারণে গৃহবধূ উধাও হন বলে জানান স্থানীয়রা। গতকাল বুধবার বিকেলে সৌদি আরব প্রবাসী মোহাম্মদ ইউসুফ প্রবাস থেকে দেশে ফিরে দেখেন ঘরে স্ত্রী সন্তান ও টাকা-স্বর্ণালংকার কিছুই নেই। স্ত্রী-সন্তানের সুখের জন্য গড়ে তোলা তার বিল্ডিংটি খালি পড়ে আছে।
জানা গেছে, বাহারছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মধ্যম বাঁশখালা গ্রামের মোহাম্মদ ইউসুফ দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন। ২০০৬ সালে সৌদি প্রবাসীর সাথে বৈলছড়ি ইউনিয়নের নুইন্যাপুকুর পাড় এলাকার রশিদ আহমদের মেয়ে মোরশেদা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে। বিদেশে উপর্জন করা সব টাকা-পয়সা পাঠান স্ত্রী মোরশেদা বেগমের কাছে। এমনকি প্রতিবার দেশে আসার সময় নিয়ে আসতেন স্বর্ণালংকার।
এদিকে কিছু দিন ধরে মোরশেদা বেগম পরকিয়ায় লিপ্ত। এক যুবলীগ নেতার সাথে তার পরকিয়া প্রেম চলছিল বলে জানান এলাকাবাসী। শেষ পর্যন্ত স্বামীর জমানো ২৫ লাখ টাকা, সাড়ে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও বাড়ির আসবাবপত্রসহ ৫ সন্তান নিয়ে উধাও হয়ে যান স্ত্রী মোরশেদা।
এদিকে খবর পেয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসেন প্রবাসী ইউসুফ। তিনি বাহারছড়া ইউনিয়নের মধ্যম বাঁশখালা গ্রামের আহমদ হোসেনের ছেলে। ইউসুফ দেখেন তার বিল্ডিংটি তালাবদ্ধ। স্ত্রী-সন্তান কেউ নেই। দরজা খুলে দেখা যায়, বাড়ির টিভি-ফ্রিজ, এমনকি আসবাবপত্র সব নিয়ে গেছেন স্ত্রী। এই অবস্থায় প্রবাসী ঘরের দরজায় বসে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছেন। স্থানীয় লোকজন এবং স্বজনরা তাকে সান্ত¦না দিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, মোরশেদা ৫ ছেলে-মেয়েসহ ঈদের সময় বাবার বাড়ি বৈলছড়িতে যান। গত ২ মে থেকে বাবার বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে উধাও হয়ে যান। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন নম্বরটিও বন্ধ। স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে প্রবাসী এখন নির্বাক। এই ঘটনায় বাঁশখালীতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসী মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, তাদের সংসারে কোন দিন অশান্তি ছিল না। কোন কিছুর অভাবে রাখেননি স্ত্রীকে। তবুও কেন এবং কি কারণে তাকে ছেড়ে স্ত্রী উধাও হয়ে গেল বুঝে আসছে না। তিনি স্ত্রী-সন্তানদের ফেরত পেতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে দেশে ফিরেই স্ত্রী-সন্তানদের সন্ধান পেতে বাঁশখালী থানায় জিডি করেছেন তিনি।
ইউসুফের শাশুড়ী আরফা বেগম জানান, মেয়ে কোথায় গেছে আমরা জানি না। লজ্জায় আমরা মুখ দেখাতে পারছি না। শুনেছি মোরশেদা স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছে।
ইউসুফের বৃদ্ধা মা রশিদা বেগম জানান, এত সুন্দর সংসার ছেড়ে বউ মা কেন অপরজনের হাত ধরে চলে গেল বুঝতে পারছি না। আমি বউ মা এবং আমার নাতিদের ফিরে পেতে চাই।
বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, এই বিষয়ে একটি জিডি হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।