বাঁশখালী প্রতিনিধি
বাঁশখালী উপজেলার চেচুরিয়া বিল এলাকায় বাঁশখালী-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের সাথে গ্যাস পাম্প সংলগ্ন জান্নাত ড্রিংকিং ওয়াটার ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ভবনের চাল, গ্রিল, দরজা, জানালা ও দরজা জানালার গ্লাস খুলে লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। লুট করা হয়েছে খামারের গরু ও প্রজেক্টের মাছ। এমনকি বিদ্যুতের সুইচ, পানির লাইনের পাইপ ও বাথরুমের ফিটিংস পর্যন্ত খুলে ভেঙে লুটতরাজ চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার ওয়াটার ফ্যাক্টরির মালিক শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে পশ্চিম চাম্বল এলাকার মৃত মাহমুদউল্লাহর ছেলে হেফাজ উদ্দিন ও ফ্যাক্টরির কর্মচারী পূর্ব বড়ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ সোহেলকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ এলাকাবাসীর সহায়তায় বাঁশখালী পৌরসভার পশ্চিম নেয়াজরপাড়া এলাকার জনৈক এরশাদের বাড়ি থেকে ৮ লক্ষাধিক টাকা মুল্যের মালামাল উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলার চেচুরিয়া বিল এলাকায় আব্বাস হাজীর মালিকানাধীন ওই ভবন ও সুবিশাল জায়গায় আফ্রিকা প্রবাসী জসিম উদ্দিন ও মিনজিরিতলা এলাকার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম যৌথভাবে জান্নাত ওয়াশ ড্রিংকিং ওয়াটার ফ্যাক্টরি চালু করেন। অবশিষ্ট জায়গায় গড়ে তুলেন গরুর খামার ও মাছের প্রজেক্ট। সোহেল ছিলেন ওই ফ্যাক্টরির কর্মচারী এবং হেফাজ উদ্দিন ফ্যাক্টরি মালিক জসিমের ভাগ্নে।
মামলা সূত্র জানায়, ফ্যাক্টরি মালিক আফ্রিকা প্রবাসী জসিম উদ্দিনের শীলক‚প এলাকায় আরো একটি মাছের প্রজেক্ট রয়েছে। ভাগ্নে হেফাজ উদ্দিন ওই প্রজেক্ট দেখাশুনা করতেন। এরমধ্যে ওই প্রজেক্টের প্রায় ৭০ লাখ টাকার হিসাব গরমিল করায় মান্যগণ্য লোকজনের মধ্যস্ততায় তাকে সব হিসাব বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত শনিবার মালিকের ভাগ্নে হেফাজ ফ্যাক্টরির কর্মচারী মোহাম্মদ সোহেলসহ আরো কিছু অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী নিয়ে ফ্যাক্টরির সব মালামাল খুলে ভেঙে লুটতরাজ করে ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বেই তারা সটকে পড়েন। হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের সময় ফ্যাক্টরি বন্ধ ছিল। সেখানে লোকজন না থাকায় সিসি ক্যামেরা, লাইট ফ্যান বিদ্যুৎ সামগ্রী ও ওয়াটার ফ্যাক্টরির সব মালামাল, ভবনের টিনের চাল, গরুর খামারের পিলার, টিন এমনকি বিভিন্ন কক্ষে ভাংচুর চালিয়ে বৈদ্যুতিক সুইচগুলোও নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে ওই ফ্যাক্টরির ৭০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফ্যাক্টরি মালিক শহীদুল ইসলাম জানান, পশ্চিম চাম্বল এলাকার হেফাজ উদ্দিন ও পূর্ব বড়ঘোনার সোহেলের নেতৃত্বে এই হামলা, ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালানো হয়েছে। এর মধ্যে সোহেল ফ্যাক্টরির কর্মচারী এবং হেফজ উদ্দিন আমার পার্টনার জসিমের ভাগ্নে। এ ঘটনায় ফ্যাক্টরির ৭০ লক্ষধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে পুলিশ মিয়ারবাজারের পশ্চিম পাশে জনৈক এরশাদের বাড়ি থেকে কিছু মালামাল উদ্ধার করেছে।
এ প্রসঙ্গে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার হওয়া বাড়ির মালিক মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, আমি হেফাজ উদ্দিনের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা পাই। কয়েকদিন আগে তার কাছে টাকা দাবি করে। আমার সাথে পরামর্শ না করে আমার অনুমতি ছাড়াই ট্রাকযোগে কিছু মালামাল আমার বাড়ির নিচে রেখে যায়। পুলিশ এসে ওই মালামাল নিয়ে গেছে। ওই মালামাল লুট কিংবা অন্য কোন ঘটনার সাথে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড এলাকার একটি বাসা থেকে ৮ লক্ষাধিক টাকার লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।