বাঁকখালী নদীর দখল-দূষণ দেখে হতাশ দুই উপদেষ্টা

6

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার শহরের প্রধান নদী বাঁকখালীর দখল-দূষণের ভয়াবহ চিত্র সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম. সাখাওয়াত হোসেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট পয়েন্টে নেমেই দখল ও দূষণের ভয়াবহ দৃশ্য দেখে হতাশা প্রকাশ করেন দুই উপদেষ্টা। তারা প্যারাবন নিধন করে তৈরি করা অবৈধ বসতবাড়ি, দোকানপাট, পোলট্রি ফার্ম, চিংড়িখামার, আবাসনের জন্য নির্মিত প্লটগুলো দেখেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পুলিশ সুপার মো. সাইফুদ্দিন শাহিন, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন, বিআইডবিøউটিএ, বন বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট থেকে দুই উপদেষ্টা নদীর পেশকারপাড়া অংশে যান। সেখানেও দখল-দূষণের ভয়াবহ দৃশ্য দেখেন। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুই উপদেষ্টা।
এ সময় উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নদীর অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল হয়ে গেছে। দখলীয় জমিতে শত শত অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। নদীর জায়গা নদীকে ফেরত দিতে হবে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, দখল-দূষণে বাঁকখালী নদী এখন মৃতপ্রায়। অবৈধ স্থাপনা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আছেন। আবার নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, যেসব জায়গায় আদালতের স্থিতাবস্থা আছে সেগুলো আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে। ৪ মাস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিরতার মধ্যে ছিল, এখন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আশা করি দ্রুতই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে প্রশাসন। তবে কবে থেকে তা বলব না, এতে করে দখলদাররা বার্তা পেয়ে যাবে। তিনি বলেন, বাঁকখালী নদীকে দখল মুক্ত করা কক্সবাজারবাসীর অনেক দিনের দাবি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অবস্থা দেখে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সৈকতে অপরকল্পিত নির্মাণ কাজের লাগাম টেনে ধরা হবে। সমুদ্র সৈকতে যেভাবে নির্মাণ কাজ চলছে, এটা যদি লাগাম টেনে না ধরা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের সী-বিচ কিন্তু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সী-বিচ হয়ে যাবে। এটা হতে দেওয়া যাবে না।
কক্সবাজারের আলোচিত ৫১ একর নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম কক্সবাজারের ডিসিকে ফোন করে এই বনের জমি দখল মুক্ত করতে বলেছি। কক্সবাজারের তথাকথিত উন্নয়ন থেকে সাড়ে ১২ হাজার বনভূমি বন বিভাগকে দিয়ে দেওয়ার কথাও জানান পরিবেশ উপদেষ্টা। প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন না হলে ঢাকায় মেট্রোরেলে চড়ে কোনো লাভ নেই।