গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ‘যথাযথ নিয়ম মানলে’ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপকে ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা দিতে ‘রাজি হয়েছেন’ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
তিনি বলেছেন, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন বসুন্ধরা গ্রæপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। সেখানে তাদের মধ্যে ঋণ পুনঃতফসিল নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী ও কবির আহমেদও ছিলেন। আহমেদ আকবর সোবহানের সঙ্গে ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল।
আরিফ হোসেন গতকাল শুক্রবার বলেন, “উনি (আহমেদ আকবর সোবহান) এসে গভর্নরকে বলেছেন, তারা কোনো ব্যাংকে খেলাপি হননি। টাকা পাচার হওয়ার বিষয়ে সিআইডির খবর তাদের দেশ-বিদেশে সমস্যায় ফেলে দেয় বলে তিনি গভর্নরকে জানান। এতে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় বলেও তিনি তুলে ধরেন।” খবর বিডিনিউজ’র
আরিফ হোসেন বলেন, “গভর্নর তাকে বলেন, এই খবরের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি (আহমেদ আকবর সোবহান) পুনঃতফসিল করতে চাইলে করবেন। তবে এটা করতে হলে কিছু টাকা বা ডাউন পেমেন্ট দেওয়া লাগবে। অর্থাৎ একটা নিয়মের মধ্যেই তাকে ডাউনপেমেন্ট দেওয়া লাগবে। ডাউনপেমেন্ট দিলে যেসব ব্যাংক তারল্য সংকটে রয়েছে, তাদের জন্যও ভালো হবে।”
মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য পলিসি করে দিয়েছে, কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা পুনঃতফসিল করতে পারবে। তাই বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য পুনঃতফসিল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো মতামত নেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
তিনি বলেন, “গভর্নর স্পষ্ট জানিয়েন যে, বাংলাদেশ ব্যাংক কারো ব্যবসা বন্ধ করবে না। এমনকি বেক্সিমকোর ব্যবসা বাংলাদেশ ব্যাংক বন্ধ করেনি। ব্যবসায়ে উৎসাহ দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ। এমন যদি হয় ডাউনপেমেন্ট করতে হবে ১০ শতাংশ, আর গ্রাহক বলছে তারা করতে পারবেন ৫ শতাংশ। তখন সেই ব্যাংক এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠাবে, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে বিষয়ে অনুমোদন দিতেও পারে, আবার নাও দিতে পারে।”
আরিফ হোসেন খান বলেন, “কয়টা ব্যাংকের সঙ্গে বসুন্ধরার ব্যবসা আছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যালোচনা করবে। পরবর্তী সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক আবার বৈঠকে বসতে পারে। গভর্নর তাকে (আহমেদ আকবর সোবহান) বলেছেন যে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়নি। ব্যক্তিদের হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আহমেদ আকবর সোবহান জানিয়েছেন, তার চার ছেলের ব্যবসা আলাদা এবং বিভিন্ন ব্যাংক থেকে সেই অনুযায়ী ঋণ নেওয়া হয়েছে। ফলে তাদের কোনো ঋণ একক গ্রাহকের সীমা অতিক্রম করেনি। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, আরজেএসসির ফর্ম–১২ অনুযায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে সব প্রতিষ্ঠানে তার নাম রয়েছে। সুতরাং আলাদা গ্রুপ হিসেবে বিবেচিত হবে না। নিয়ম মেনে ঋণ নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনতে হবে।”