বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা আনন্দিত

2

হাটহাজারী প্রতিনিধি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা যখন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করি, সঙ্গে সঙ্গে বন্যা শুরু হয়। ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, এ জায়গায় কী ধরনের বন্যা হবে। অন্যান্য বছর যে বন্যা হয়, এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বন্যায় যারা বাড়িঘর হারিয়েছিল, তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না। আজ তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।
গতকাল বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয় থেকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বন্যায় চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, অস্বাভাবিক অবস্থাতে গৃহনির্মাণে গুণগত মান ঠিক রাখাটা চ্যালেঞ্জের ছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাশে ছিল বলে কাজটি সহজ হয়েছে।
বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক দিয়েই সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প শেষ করায় এবং প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা পরবর্তী সময় নানাভাবে প্রস্তাব আসছিল যে, ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি করার জন্য টাকা দিতে গেলে তা ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে যাবে। টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আমি শক্ত অবস্থান নিয়েছিলাম। পরে জানলাম এটা সেনাবাহিনী করবে, তখন স্বস্তি পেলাম। টাকার সঠিক ব্যবহার হয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীকে ঘর নির্মাণে যে টাকা দিয়েছিলাম তার অর্ধেক টাকাতে সঠিকভাবে কাজটা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এছাড়া জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সুবিধাভোগীরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ এবং ৩৩ পদাতিক ডিভিশন এই বিশেষ গৃহায়ন প্রকল্পটি প্রায় ২৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০০টি ঘর (ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি) সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এদিকে, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রামের হাটহাজারী, মিরসরাই ও ফটিকছড়ির ৩০টি পরিবারের হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। তাদের মাঝে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
এ সময় সেনাবাহিনীর ২৪ আর্টিলারি বিগেড ও গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আবুল কালাম শামসুদ্দিন রানা,লক্ষীছড়ি জোনের জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান, মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এবং মাহফুজা জেরিন, হাটহাজারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদসহ সরকারি-বেসরকারি এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।