বজ্রপাতে ৯ জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে রোববার ও গতকাল সোমবার ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪ জন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে ৩ জন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে ২ জন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একজন, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একজন, চাঁদপুরের কচুয়ায় একজন, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে একজন মারা গেছেন।
কুমিল্লা : জেলার বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়। তারা হলো-পয়ালগাছা গ্রামের প্রয়াত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) ও আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)। দুজনেই বড়হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। খবর বাংলানিউজের।
অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে কৃষি জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন-বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কোরবানপুর গ্রামের বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল চন্দ্র দেবনাথ ও আন্দিকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভুঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভুঁইয়া। এ সময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
দেবিদ্বার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। সরকার থেকে তারা পরিবারকে সহায়তা করা হবে।
কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের হাওরের মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সকাল ও দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের রাণীগঞ্জ গ্রামের মৃত আশ্রাব আলীর স্ত্রী ফুলেছা বেগম (৬৫), অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের মৃত যতিন্দ্র দাসের ছেলে ইন্দ্রজিৎ দাস (৩৫) ও একই উপজেলার খয়েরপুর-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের খয়েরপুর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১৫)।
অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন, স্থানীয় কলমা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাধাকৃষ্ণ দাস ও মিঠামইন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্পন বিশ্বাস বজ্রপাতে নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নেত্রকোনা : নেত্রকোনায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে মাদরাসা শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার মধ্য রাতে জেলার কলমাকান্দার গোবিন্দপুর গ্রামে ও গতকাল সকালে মদন উপজেলার তিয়শ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- কলমাকান্দার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধুনন্দ গ্রামের বাসিন্দা দিদারুল ইসলাম। তিনি উপজেলার গোবিন্দপুর বাজার এলাকায় স্থানীয় একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন।
অপরদিকে আরাফাত মিয়া (৯) মদন উপজেলার তিয়শ্রী গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। সে নিজ গ্রামের বাইতুল জান্নাত হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী।
চাঁদপুর : চাঁদপুরের কচুয়ায় উপজেলার উত্তর কচুয়া ইউনিয়নের নাহারা গ্রামে বজ্রপাতে বিশাখা সরকার (৩৫) নামে এক কৃষাণীর মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বিশাখা সরকার উত্তর কচুয়া ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের হরিপদের স্ত্রী। ওই কৃষাণী বাড়ির পাশের জমি থেকে খড় আনতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় বজ্রপাতে দুরবাসা দাস (৩৫) নামে এক ধান কাটার শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন তার দুই সহোদরসহ তিনজন। সকালে ও দুপুরে পৃথক বজ্রপাতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
মৃত দুরবাসা দাস উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নে আড়িয়ামুগুর বড়হাটি গ্রামের কালাবাসি দাসের ছেলে।
বানিয়াচং উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাদ বিন জাহাঙ্গীর জানান, সকালে আড়িয়ামুগুরের পূর্বের হাওরে ধান কাটছিলেন তিন সহোদর। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে তারা আহত হন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে গতকাল বিকেলে বজ্রপাতে মানিক মিয়া (৬২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন হানিফ মিয়া (৬০) নামে অপর এক কৃষক। উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বাঞ্ছারামপুর থানার উপপরিদর্শক ফারুক আলম জানান, জমিতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মানিক মিয়া ও হানিফ মিয়া বজ্রপাতের শিকার হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মানিক মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।