পূর্বদেশ ডেস্ক
আচমকা বজ্রপাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জে শিশু-কৃষকসহ ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল রবিবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর ও আখাউড়ায় এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরব, কুলিয়ারচর ও করিমগঞ্জে এসব ঘটনা ঘটে বলে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়।
নিহতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মৃত জুয়াদ আলীর ছেলে আবদুর রাজ্জাক (৩৫), নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের মৃত আবদুস সালামের ছেলে মো. শামসুল হুদা (৬৫) ও একই উপজেলার কচুয়া গ্রামের আলমগীরের শিশুকন্যা মোছাম্মদ জাকিয়া (৭), আখাউড়া উপজেলার রুটি গ্রামের সেলিম মিয়া (৬০) ও একই উপজেলার বনগজ গ্রামের জাকির খাঁ (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিকালে উপজেলার টেকানগর গ্রামে ধান কাটার সময় আচমকা বজ্রপাতে আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থলেই মারা যান।এছাড়া নাসিরনগর উপজেলার গোকর্ণ গ্রামের বেড়িবাঁধ এলাকায় ফসলি মাঠে কাজ করার সময় শামসুল হুদা নামে এক কৃষক বজ্রপাতে মারা যান। চাতলপাড় ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে এসে শিশুদের খেলা করার সময় বজ্রপাতে জাকিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
এছাড়া ভলাকুট ইউনিয়নের হামিদা বেগম (৫০) ধান শুকাতে গিয়ে বজ্রপাতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, তার কণ্ঠনালী পুড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, আখাউড়া উপজেলার বনগজ গ্রামে ধান কাটার মেশিন নিয়ে মাঠে যাওয়ার সময় জাকির খাঁ ও রুটি গ্রামে নিজ ধানি জমিতে কাজ করার সময় সেলিম মিয়া বজ্রাপাতে নিহত হন।
আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন দুইজনের ও নাসিরনগর থানার ওসি খাইরুল ইসলাম তিনজন মারা যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, একই কারণে কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলায় চারজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে উপজেলার সাগুলি গ্রামে বজ্রপাতে হাদিস মিয়া (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে করিমগঞ্জ থানার ওসি মাহবুব মোরশেদ জানান। তিনি বলেন, বিকাল ৪ টার দিকে বাড়ির সামনে মরিচ ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান হাদিস মিয়া।
এ ছাড়া বিকাল ৩ টার দিকে ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া (২৮) ও রসুলপুর গ্রামের আফছর উদ্দিন মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া (৬৫) এবং কুলিয়ারচর উপজেলার হাজারিনগর গ্রামের সফিকুল ইসলাম সফু মিয়ার ছেলে কবির মিয়া (২৫) মারা যান। আহত হয়েছেন হোসেনপুর উপজেলার আড়াইবাড়িয়া গ্রামের আবু বকর (৬০) নামে এক বৃদ্ধ।
স্থানীয়রা জানান, বিকাল ৩ টার দিকে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। আগে থেকেই জমিতে কাজ করছিলেন কৃষকরা। বজ্রপাতে তারা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক উম্মে হাবিবা জুঁই বলেন, বজ্রপাতে আক্রান্ত তিন রোগী আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তাদের মৃত্যু হয়।