ফ্যাসিবাদের দোসর সুজন বড়ুয়াকে অপসারণের দাবি

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়ার অপসারণের দাবি জানিয়েছে স্বাস্থ্য সহকারীরা। এই বিষয়ে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালককে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক বরাবরে স্মারকলিপি দেন তারা।
বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার দালাল, জালিয়াত, যৌননিপীড়ক, কমিশন বাণিজ্যের হোতা, নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতি বাণিজ্যের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিভাগে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েমকারী সুজন বড়ুয়া। ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দাপট দেখিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়কে দুর্নীতির আতুড় ঘরে পরিণত করেছে। যার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সুজন বড়ুয়া নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, নিজ বেতনে দায়িত্ব প্রদান, বিভিন্ন ক্যাম্পেইন, জাতীয় দিবস, ক্ষুদে ডাক্তার বিল, বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে কমিশন আদায়, কর্মচারীদের মধ্যে দলাদলি, স্থানীয় সিভিল সার্জন ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে কর্মচারীদের হয়রানি করে আসছে। কর্মকর্তাদের নামে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে ঘুষ আদায়সহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করছেন তিনি। এমনকি তার ভয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী মুখ ফুঁটে কিছু বলতে পারে না।
তারা জানান, সুজন বড়ুয়া রাঙামাটি জেলা পরিষদ থেকে ২০১২ সালে জাল নাগরিকত্ব সনদ ও জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর হিসেবে চাকুরি নেয়। এ বিষয়ে অভিযোগ হলে জেলা পরিষদকে না জানিয়ে গোপনে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় চলে যান। ২০১৫ সালে জেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর হিসেবে ১০ম গ্রেডে বান্দরবান জেলা পরিষদ থেকে বিধি বহির্ভ‚তভাবে অবৈধ পদোন্নতি নেয়। ২০১৬ সালে জনৈক উপজাতি নারী সহকর্মীকে যৌননিপীড়নের অভিযোগে বান্দরবানে সাময়িক বরখাস্ত হন। ঐ তদন্ত চলাকালীন অবস্থায় তিনি তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. উদয় শংকর চাকমাকে ম্যানেজ করে জেলা পরিষদকে না জানিয়ে গোপনে বদলি হয়ে চলে যায় ফেনী। এরপর ২০১৮ সালে জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আরেকটি পদোন্নতি নিয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যোগদান করে অদ্যবধি ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছে।
স্বাস্থ্য সহকারীদের ভাষ্য, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন সরকারের সময় পুরো স্বাস্থ্য বিভাগে সে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে এসেছে। আগস্ট বিপ্লবের পর তার এসব অপকর্ম আমরা ছাত্র সমন্বয়কসহ সিভিল সার্জন বরাবরে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে অবহিত করলে সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মহোদয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে বলেন। আমরা তার সম্মানার্থে এ যাবৎ ধৈর্য ধরেছি। কিন্তু দুর্নীতিবাজ সুজন বড়ুয়া নতুন আঙ্গিকে চাদাবাজি কমিশন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো কিছুকে ভ্রুক্ষেপ করছে না।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি মো. ফজলুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এসএম কুদরাত ই খুদা রকি ও মঈনুল আহসান আলী সাগরসহ অনেকে বক্তব্য দেন। এতে জেলার ১৫টি উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীসহ মাঠ পর্যায়ে দুই শতাধিক কর্মচারি অংশ নেন।