শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভ‚ঁইয়া বলেছেন, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে ফ্যাসিবাদী দোসরদের বাদ দিয়ে সকল দলের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে খেয়াল রাখতে হবে যাতে বিগত সরকারের মত একই ধারণার মানুষগুলো আবার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। যাতে তাদের হটাতে আবারও গণঅভ্যুত্থান না হয়। কারণ সকল দলের অংশগ্রহণে ব্যবসায়ী সংগঠন পরিচালিত হলে ব্যবসায়ীরা নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারবেন।
গতকাল শনিবার দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) উদ্যোগে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, অ্যাসোসিয়েশন, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
গতকাল শনিবার বিকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, কমিশনার অব কাস্টমস মো. জাকির হোসেন।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনো লোক নেই। আবার আমরা প্রভাবিতও নই। তাই বিগত সরকারের সময়ে দখল অপদখলের কারণে বাণিজ্য সংগঠনগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি। তাই দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো চিহ্নিতপূর্বক তা সমাধান করে কার্যকর করার জন্য প্রশাসককে সহায়তা করতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও অর্থ সংক্রান্ত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসনে উপদেষ্টা পরিষদমন্ডলীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তা সমাধানের চেষ্টা করবো।
উপদেষ্টা বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কৃষকদের থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করে ভোক্তা পর্যায়ে ন্যায্যমূল্যে সরবরাহের জন্য সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ করতে হবে। এতে মধ্যস্বত্ত¡ভোগী সিন্ডিকেট কার্যকারিতা হারাবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান সভায় উত্থাপিত সমস্যাগুলো চিহ্নিতপূর্বক সমাধানে কাজ করার আশ্বাস দেন। এছাড়াও বন্দর ও কাস্টমস সংক্রান্ত সমস্যাগুলো নিরসনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে সুরাহা করার আশ্বাসও দেন তিনি। একই সাথে চট্টগ্রামের সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনগুলোকে লিখিত আকারে তুলে ধরার আহবান জানান।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে বিএসটিআই’র উন্নত ল্যাব থাকার পরও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পণ্যের পরীক্ষার ক্ষেত্রে এখনও ঢাকায় যেতে হয়। ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে বিএসটিআই আগামি ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে সকল পরীক্ষা চট্টগ্রাম থেকে সম্পন্ন করবে।
চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, সরকার আমাকে চট্টগ্রাম চেম্বারে একটি সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেছে। সকলের সহযোগিতা নিয়ে সেই দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে চাই। দায়িত্ব নিয়ে আমি সদস্য নবায়ন ও আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন এবং প্রতিদিনের হালনাগাদ তথ্য চেম্বার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করছি।
সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন আইসিডির অতিরিক্ত চার্জ, ব্যবসায়িক হয়রানী, ট্যাক্স ও ভ্যাট নামে হয়রানী, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এক্সেল লোড, বন্দর শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ, শ্রমিকদের টিসিবির মাধ্যমে রেশন কার্ড, বাণিজ্য সংগঠনগুলোতে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।
মতবিনিমিয় সভায় অন্যান্যের মধ্যে চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরোয়ার জামাল নিজাম, আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফ্রুটস ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন’র সভাপতি মাহবুব রানা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সালামত আলী, সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবিদা মোস্তফা, বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের আহব্বায়ক এস এম সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহ নওয়াজ, প্রাইম মুভার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম খান, চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক নেতা নুর উল্লাহ বাহার, নারী নেত্রী শাহানা চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। এসময় বিভিন্ন ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ সহ ব্যবসায়ীরা। বিজ্ঞপ্তি