পূর্বদেশ ডেস্ক
মার্কিন হামলার ক্ষত এখনও শুকোয়নি! সেই ক্ষতে এ বার হামলা চালাল ইসরায়েল। ইরানের পরমাণুকেন্দ্র ফোরডোর প্রবেশের রাস্তায় বোমা ফেলল তারা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা দফতর (আইডিএফ) জানিয়েছে, ফোরদোয় প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করতে, ওই পরমাণুকেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তায় হামলা চালানো হয়েছে গতকাল সোমবার সকালে (ইসরায়েলি সময়)। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা।
গত ১৩ জুন ইরানে নতুন করে হামলা চালায় ইসরায়েল। তার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে চলছে সামরিক উত্তেজনা। ইসরায়েলি হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইরানও। গতকাল দুই দেশের সংঘাত ১১তম দিনে পড়ল। সকাল থেকেই ইরানের বিভিন্ন প্রান্তে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনা। তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুধু তা-ই নয়, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী রেভলিউশনারি গার্ডের হেডকোয়ার্টারেও হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ জানিয়েছেন, মূলত বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় এবং সামরিক দফতরই ইসরায়েলি বাহিনীর লক্ষ্য। তেহরানে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলির মধ্যে রয়েছে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের বাসিজ বাহিনীর সদর দফতর, নিরাপত্তা বিষয়ক সদর দফতর, এভিন জেল ইত্যাদি। গতকাল দুপুরে এভিনের প্রবেশপথের অদূরেও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
গতকাল ইসরায়েলের অন্যতম লক্ষ্যই ছিল ফোরডো। রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময়) ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। তার মধ্যে একটি ছিল ফোরডো। ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি পাহাড়ের নিচে রয়েছে এই গবেষণাকেন্দ্রটি। এটিই ইরানের সবচেয়ে গভীর, সুরক্ষিত এবং গোপনীয় পরমাণুকেন্দ্র। পাহাড়ের নীচে মাটি থেকে প্রায় ৩০০ ফুট গভীরে এই কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে বাইরের কোনও শত্রæ আক্রমণ করলে এই কেন্দ্রের গায়ে তার আঁচ না লাগে। ফোরদো থেকে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপন্ন হয়, যা ইসরায়েলের তো বটেই, আমেরিকারও মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। রবিবার আমেরিকা ফোরডোয় বি২ বম্বার ব্যবহার করে বাঙ্কার বাস্টার বোমা ছোড়ে।
আমেরিকার হামলায় কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফোরডো, তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। আমেরিকার ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ ফোরদোয় কতটা ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, তা নির্ধারণ করতে পারেননি মার্কিন প্রতিরক্ষা আধিকারিকেরাও। তবে জাতিসংঘ নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ফোরদোর পরমাণুকেন্দ্রে বড়সড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল! রবিবারই আমেরিকার হামলার পরে ফোরডোর পরমাণুকেন্দ্রের কী অবস্থা হয়েছে, তার আভাস মিলেছিল এক উপগ্রহচিত্রে। ‘প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি’ নামে এক সংস্থার প্রকাশ করা উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ করে সংবাদসংস্থা এপি দাবি করে, একসময়ের বাদামি রঙের পাহাড়ের কিছু অংশ ধূসর হয়ে গিয়েছে। হামলার আগের উপগ্রহচিত্রের থেকে যা কিছুটা আলাদা।