ফটিকছড়ির কামারশালায় ব্যস্ততা বেড়েছে কোরবানি উপলক্ষে

1

মো. এমরান হোসেন,ফটিকছড়ি

৭জুন, শনিবার দেশে কোরবানি ঈদ। ঈদ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির কামার শিল্পীরা। এখন দম ফেলারও সময় নেই তাদের। দিনরাত সমান তালে লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত হয় উঠেছে প্রতিটি কামারশালা।
জানা গেছে, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামারশালার কারিগররা দা, বটি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি তৈরি করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলা সদরে বিবিরহাট বাজার, নাজিরহাট পৌর সদরে নাজিরহাট বাজার, দক্ষিণ ফটিকছড়িতে নানুপুর বাজার, আজাদী বাজার, উত্তর ফটিকছড়িতে কাজীরহাট বাজার, শান্তিরহাট বাজার, বাগানবাজার, হেয়াঁকো বাজারসহ প্রায় ৪৯টি হাটবাজারে কামাররা দোকানে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোরবানির এসব ব্যবহার্য হাতিয়ার স্থানীয় চাহিদা মেটানার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলা দা, বটি, চাপাতি, চাকুসহ বিভিন্ন হাতিয়ার তৈরি করছেন তারা। বর্তমান আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পীর দুর্দিন চললেও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে এ শিল্প।
বিবিরহাটে দা, বটি, চাপাতি শান দিতে আসা আনোয়ার মোস্তফা মঞ্জু বলেন, প্রতি বছর আমরা কোরবানির আগে দা, বটি, চাপাতি কামার থেকে শান দিয়ে নিয়ে যায়। এবারও শান দিতে এসেছি, তবে পূর্বের তুলনায় এবার একটু দাম বেশি।
২৯ বছর যাবৎ এই কাজে সম্পৃক্ত নাজিরহাট বাজারে কামার শিল্পী শিবু দাশ বলেন, এক সময় কামারদের যে কদর ছিল বর্তমান তা আর নেই। মেশিনের সাহায্যে বর্তমান আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। ফলে আমাদর তৈরি যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষ আকর্ষণ হারাচ্ছে। হয়ত এক সময় এ পেশা আর থাকবে না। তবে কোরবানির ঈদের সময় আমরা একটু আশাবাদী হই। তিনি আরো বলেন, আমাদর পূর্ব পুরুষরা এ কাজ করে গেছে। আমাদেরকেও করতে হচ্ছে পেটের দায়ে। সারা বছর কাজ কম থাকলেও কোরবানির সময় কাজ বাড়ে ।
বিবিরহাট বাজারের মায়ের আঁচল নামের দোকানের মালিক প্রিয়তোষ দাশ বলেন, ১৩ বছর যাবৎ আমার দোকান । লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে গেছে । তারপরও কম দামে শান দিয়ে টাকা নিচ্ছি। দা ৬০ থেকে ৮০ ছুরি ৩০ থেকে ৫০, বটিতে লবণপানি দেওয়া ৭০ থেকে ১০০, রামদা ও কিরিচ ৩০০ টাকা।
আরেক কামার শিল্পী সুজিত কর্মকার (৫২) বলেন, আমার বয়স ১২ বছর থেকে এ পেশায় জড়িত তবে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতির ফলে এ শিল্পের চাহিদা কমে আসছে বলে তিনি জানান।