লন্ডনভিত্তিক একটি অনলাইন টিভি চ্যানেলের টক শো সূত্রে রহস্য উন্মোচন হতে চলছে চট্টগ্রামের রাউজানের আলোচিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু জাফর হত্যার রহস্য। সেই টক শো’তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল হাসিনুর রহমান দাবী করেন, বিগত ২০০৮ সালের শেষে রাউজানের একজন সাবেক এম.পি ফজলে করিম চৌধুরী তার একজন বিশ্বাসভঙ্গের চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে আমাকে ক্রস ফায়ার করতে বলে। আমি ঐ এম.পির কথা অমান্য করায় তাকে র্যাব থেকে বদলি করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে রাউজানের সাবেক এম.পি তৎকালীন র্যাবের ইন্টেলিজেন্ট উইংয়ের প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে দিয়ে আবু জাফর চেয়ারম্যানকে হত্যা করে গুম করেন। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে নগরীর মোমিন রোডে একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটি দাবী করেন সৈয়দ আবু জাফরের ছেলে জিসানুর রহমান। এসময় তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে জিসানুর বলেন, ২০১০ সালে ২৭ মার্চ তার ছোট ভাই এবং চাচা সালাহ উদ্দীনকে (আব্বুর খালাতো ভাই) নিয়ে উনার বাসায় যাচ্ছিলাম। নগরীর খুলশীস্থ ভূঁইয়া গলির মুখ থেকে আমাদের সামনেই একটি কালো রঙের মাইক্রো বাস আমার আব্বুকে তুলে নিয়ে যায়।
বিষয়টি ঘরে ফিরে আম্মুসহ সবাইকে বললে সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এই ঘটনায় খুলশী থানায় জিডি করতে গেলে আসামিদের নাম শুনে থানা তা গ্রহণ করেনি। সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর দপ্তরে গিয়েও আমরা সুরাহা পাইনি। তবে গত ২২ আগস্ট ২০২২ লন্ডনভিত্তিক ঙহষরহব ১অ ঘবংি চ্যানেলের টকশোতে সঞ্চালক কাজী হেমায়েত উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে লে. কর্নেল হাসিনুর রহমান আমার আব্বার অপহরণের বিয়টি নিশ্চিত করেন-যুক্ত করেন জিসানুর।
টক শোর বরাতে জিসানুর বলেন, কাজী হেমায়েত উদ্দিন যখন লে. কর্নেল হাসিনুরকে এই হত্যাকান্ড নিয়ে প্রশ্ন করেন তার উত্তরে তিনি বলেন, “দেখুন জিয়াউল আহসানের দুর্বলতা হল ৮ সালের শেষে রাউজানের একজন এম.পি তার একজন বিশ্বাসভঙ্গের চেয়ারম্যানকে আমাকে গ্রেফতার করে ক্রসফায়ার করতে বলে। সে এম.পির কথা আমি শুনিনি। সে চেয়ারম্যান বলে আমাকে এই এম.পি একটা এল.এম.জি ১২টা একে ৪৭ হস্তান্তর করছে। আপনি যেসব হত্যাকান্ডের অভিযোগ দিচ্ছেন তার ৩ গুণ আমি হত্যা করছি। আমি দেখলাম অস্ত্র হল মূল জিনিষ সন্ত্রাসীর, ব্যক্তি কোন সমস্যা না। যেহেতু চেয়ারম্যানের নামে মামলা আছে আমি আদালতে দিয়ে দেই। এই এম.পি আমার উপর চরমভাবে ক্ষেপে যায় এবং জিয়াউল আহসানকে দিয়ে ঐ চেয়ারম্যান জাফরকে হত্যা করে। জিয়াউল আহসান গর্বের সহিত কোন এক ফোরামে বলে ফেলে। তার সদস্যের একজন আমার বন্ধু ছিল। মিয়ামি হোটেল কুমিল্লায় খাওয়া দাওয়া করছে এবং তাকে সে হত্যা করে এটা অন্য গোয়েন্দা সংস্থা জানে।’ এই টক শোর পর ফজলে করিম লোক পাঠিয়ে চেয়ারম্যান জাফরের স্ত্রীকে দিয়ে টক শোর কলাকুশিলবদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করান। ২০১০ সালের ২৭ মার্চ মার্চ থেকে পরিবারের সদস্যরা সৈয়দ আবু জাফরের প্রতীক্ষায় আছেন। বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তার সন্তান জিসানুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে গুম হওয়া সৈয়দ মোহাম্মদ আবু জাফরের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার, বড় ছেলে মোহাম্মদ জিসানুর, বড় বোন আজিজুর নুর, সৈয়দুর নুর, মমতাজুল হক, নাহিয়ান উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি