নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন বলেছেন, প্লাস্টিক দূষণ এখন কেবল একটি স্থানীয় সমস্যা নয়, এটি এক ভয়াবহ বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকট। এই দূষণ সরাসরি মানবস্বাস্থ্য, প্রাণিকুল এবং প্রকৃতির ভারসাম্যের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে। খাদ্যচক্রে প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি যেমন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে, তেমনি জলজ জীববৈচিত্র ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। প্লাস্টিক দূষণ রোধে ব্যক্তি পর্যায় থেকে সচেতন হওয়ার কোন বিকল্প নেই। গতকাল চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে পরিবেশ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক সোনিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি সঞ্জয় সরকার ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক জমির উদ্দিন। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহাদাত হোসেন।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের রিসার্চ অফিসার আশরাফ উদ্দিন ও সহকারী পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্তার সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক মুক্তাদির হাসান, সহকারী পরিচালক শ্রীরুপ মজুমদার, গবেষণাগারে সিনিয়র কেমিস্ট হেযায়ফাহ সরকার ও পরিদর্শক মনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বিভাগীয় কমিশনার আরে বলেন, আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট সিদ্ধান্তই পরিবেশের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। প্রত্যেকের উচিত, ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্তর পর্যন্ত প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতনতা ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা। প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার, পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্য বেছে নেওয়া এবং পরিবেশবান্ধব জীবনধারা গড়ে তোলার দিকে এখনই নজর দেওয়া জরুরি।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজকের বাস্তবতায় প্লাস্টিক এমনভাবে আমাদের জীবনে ঢুকে পড়েছে যে, খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে মায়ের দুধেও এর উপস্থিতি শনাক্ত হচ্ছে। বিষয়টি শুধু পরিবেশ নয়, জনস্বাস্থ্যের জন্যও ভয়াবহ হুমকি। তিনি আরও জানান, কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনার সময় দেখা গেছে, নদীর তলদেশে প্রায় ৭ মিটার পুরু প্লাস্টিকের স্তর জমে আছে। এর ফলে ড্রেজিং কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ এবং পরিবেশ ব্যবস্থাকে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অনুষ্ঠানের শেষে রচনা, স্লোগান ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার ও বই বিতরণ করা হয়।