প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না থাকায় হতাশ বিএনপি

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের একশ দিন পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের কোনো রূপরেখা না থাকায় হতাশার কথা শুনিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ড. ইউনুসের ভাষণের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় গতকাল সোমবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, একটা ক্রান্তি সময়কাল আমরা পার করেছি। কালকে (রোববার) আমাদের প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় একটা ১০০ দিনের পূর্তির বক্তব্য রেখেছেন।
ভালো হয়েছে। অনেকে আশান্বিত হয়েছেন। আমি একটু আশাহত হয়েছি। আমি আশা করেছিলাম যে, প্রধান উপদেষ্টা মহোদায় তার সমস্ত প্রজ্ঞা দিয়ে সমস্যাটা চিহ্নিত করে নির্বাচনের একটা রূপরেখা দেবেন। খবর বিডিনিউজের।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রূপরেখার কথা কেন বলছি, কারণ নির্বাচন দিলে আমার অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিএনপি ক্ষমতায় যাক না যাক, তা ইমমেটিরিয়াল। আজকে যারা বাংলাদেশর ক্ষতি করতে যাচ্ছে, যারা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাচ্ছে, বাংলাদেশকে যারা সংঘাতের মধ্যে জড়িয়ে দিতে চাচ্ছে, তারা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হবে। কারণ ওই সরকারের (নির্বাচিত সরকার) পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে। এই বিষয়টা অবশ্যই চিন্তা করতে হবে।
রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনি সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রæত রোডম্যাপ ঘোষণা করার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এজন্য প্রয়োজনীয় সময় চেয়ে সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেন।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা’ শুরু করার কথা আবারও তুলে ধরে ইউনূস বলেন, এটা আর থামবে না। কিন্তু যেতে যেতে আমাদের অনেকগুলো কাজ সেরে ফেলতে হবে। এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে সেটা নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা তারজন্য রেললাইনগুলো বসিয়ে দিতে পারি আর তা হবে রাজনৈতিক দলসমূহের ঐক্যমত্যের মাধ্যমে।
সংস্কার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার আমরা অবশ্যই চাই এবং সংস্কার আমরা করব। আপনারা দয়া করে জিনিসটা যেভাবে করলে সকলের কাছে সুন্দর হয়, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, সেইভাবে এগিয়ে যান, এটা আমাদের আপনাদের কাছে অনুরোধ।
তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোনো বাধার সৃষ্টি করিনি, বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে সমর্থন দিয়ে গেছি। যদিও আপনাদের সচিবালয়ে সেখানে সমর্থন কেউ শুনে না। স্বৈরাচারের ফ্যাসিবাদের দোসরা বসে আছে। কীভাবে কাজ করবেন আপনারা? কি সংস্কার করবেন? এরা তো সংস্কার করতে দেবে না আপনাদের।
সমস্ত আমলা বসে আছে বেশিরভাগ যারা ওই স্বৈরাচারের দোসর, যারা কোটি কোটি টাকা আয় করেছে, দুর্নীতি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এগুলো একটু দৃশ্যমান করেন।
ফখরুল বলেন, আমরা বলতে চাই, দ্রুত নির্বাচন হওয়াটা দেশের জন্য মঙ্গল। কেন বলছি, সেটা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে। এই ধরনের সরকার যতদিন বেশি থাকে তত সমস্যা তৈরি হবে। কেন? এর তো ম্যান্ডেট নাই। এরা তো নির্বাচিত সরকার নয়। এর পেছনের শক্তিটা কোথায়?
মাওলানা ভাসানীর বর্ণাঢ্য জীবন-কর্মের কথা তুলে ধরেন সবাইকে তার আদর্শ অনুসরণ করার আহŸান জানান বিএনপি মহাসচিব।