জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র-তারুণ্যের ‘প্রত্যাশা পূরণে’ নতুন রাজনৈতিক দলের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। গতকাল শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আসতে চলা জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিকে নিয়ে আসিফ নজরুল ফেইসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন।
সেখানের শুভকমানা জানিয়ে আইন উপদেষ্টা লিখেছেন, “আজ নাহিদ আর আখতার শুরু করছে নতুন যাত্রা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র-তারুণ্যের প্রত্যাশা পূরণে শুরু হলো তাদের নতুন দলের অভিযাত্রা। জাতীয় নাগরিক পার্টির সবার জন্য অনেক দোয়া, শুভকামনা।” খবর বিডিনিউজ’র
আসিফ নজরুল লিখেছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর তিনি বিষন্নতায় ভুগতেন। এনসিপিতে সদস্যসচিব পদে আসতে চলা ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আখতারকে নিয়ে পোস্টে আসিফ নজরুল বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে একদিন আখতার হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে আসেন। যাকে তিনি বাড়ি থেকে ঢাকায় আনিয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করাতে রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরও আখতারের ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার লক্ষণ ছিল না।
“আমার গাড়ি থামিয়ে সে সালাম দিল। তারপর বেশ কিছুক্ষণ কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। আমি বিরক্ত হলাম। আরো বিরক্ত হলাম যখন সে বলল, নুর-রাশেদদের দল ত্যাগ করে নতুন সংগঠন করবে! আমি বললাম, আবার নতুন দল! আর কতবার মার খেতে চাও তুমি! সে মাথা নিচু করে মৃদু হাসতে থাকে। এই অদ্ভূত হাসির কোন মানে খুজে পেলাম না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আখতার হোসেনের গড়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতৃত্বে গঠিত একটি প্ল্যাটফর্ম। যে প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্বে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনের রূপ নিয়েছিল।
আখতারের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নিয়ে আসিফ বলেন, “কয়েকদিন পর ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে তার (আখতার) রক্তাক্ত ছবি দেখে দুঃখ আর হতাশায় বুক বিদীর্ণ হল। সে কি বুঝতে পারছে না কিছু হবে না আর এসব করে! বুঝতে আমি-ই পারিনি।”
আখতারের নতুন সংগঠন কয়েকমাসের মাথায় ‘এক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে’ মন্তব্য করে আইন উপদেষ্টা বলেন, “শেখ হাসিনার পতন হয়েছে; তার সংগঠনের নাহিদ হয়ে উঠেছে গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নেতা।”
এনসিপির আহব্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলা তরুণ ছাত্রনেতা নাহিদ কদিন আগেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ ছেড়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা নাহিদ ইসলাম ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।
তিনি বলেন, “উত্তাল জুলাইয়ে আমার এবং আমার মত লক্ষ মানুষের নেতা! তারপর নাহিদের সাথে কাজ করলাম নতুন সরকারে। কতবার যে সে আমাকে বিস্মিত করল তার যোগ্যতা, বাকসংযম, ব্যক্তিত্ব আর অকল্পনীয় ম্যাচিউরিটি দিয়ে! নাহিদ থাকে আমার পাশের বাসায়। সে সরকার থেকে পদত্যাগ করার দিন, গভীর রাতে তার সবুজ লনের দিকে তাকিয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ। মায়া বড় বিচিত্র বিষয়!”