নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে নগরীর পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানা এলাকায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলিবর্ষণকারী ও দোকান কর্মচারী সায়মান প্রকাশ মাহিন হত্যা মামলার পলাতক আসামি মহানগর যুবলীগ নেতা মো. ফিরোজকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ফেনী জেলার ফেনী সদর থানার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামপুরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া মো. ফিরোজ নগরীর মুরাদপুর এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে। গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বহদ্দারহাটে নিহত তানভীর সিদ্দিকী হত্যা মামলারও তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগ্পোনে ছিলেন।
র্যাব-৭ জানায়, দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৮ জুলাই নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল এবং অবস্থান কর্মসূচি চলছিল। শান্তিপূর্ণ ওই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে দোকান কর্মচারী সায়মান প্রকাশ মাহিন (১৬) অংশগ্রহণ করে। কর্মসূচি চলাকালে নগর যুবলীগ নেতা মো. ফিরোজ ও অন্যান্য দুস্কৃতিকারীরা শীর্ষ নেতৃত্বের হুকুমে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এছাড়াও আসামিরা হকিস্টিক, কিরিচ, দা ও লাঠি-সোটা দিয়ে ছাত্র জনতাকে পিটিয়ে ও ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এ সময় সায়মান আন্দোলন কর্মসূচির স্থান থেকে দৌঁড়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করলে মো. ফিরোজ এবং অন্যান্য দৃষ্কৃতকারীর গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আহত সায়মানকে দুষ্কৃতকারীরা লাঠি-লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মৃত ভেবে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সায়মানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সায়মানের বন্ধু মোহাম্মদ শরীফ বাদী হয়ে নগরের চান্দগাঁও থানায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. শরীফ-উল-আলম জানান, ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানো মহানগর যুবলীগ নেতা মো. ফিরোজকে ফেনী সদরের রামপুরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফিরোজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্র, নাশকতা, মাদক এবং ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে পাঁচটি মামলা রয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে চান্দগাঁও থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।