কোনো ব্যক্তির আয়সীমা আড়াই লাখ টাকার উপরে হলে, তাকে আয়কর দিতে হয়। তবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধায় আয়সীমা গণ্য করা হয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনে পৌরকর প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ কোনো সুবিধা নেই। তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পৌরকর মওকুফ করতে লড়ছেন নগরীর খুলশী এলাকার এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। ইরফান আল মুসাব্বির নামের এই শারিরীক প্রতিবন্ধী গত ৬ মাস ধরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে যাচ্ছেন। অবশেষে মন্ত্রণালয় বিষয়টি আমলে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চসিককে পত্র দিয়েছে। তবে সরাসরি আইনে না থাকায় করণীয় কি হতে পারে, তা জানতে মন্ত্রণালয়ে লেখার কথা জানিয়েছেন চসিকের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা।
ইরফান আল মুসাব্বির স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখেন, একজন স্বাভাবিক ব্যক্তির তুলনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের হাজারো সমস্যা ও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে জীবন যাপন করতে হয়। তাছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা-মাতা শারিরীক, মানসিক ও সামাজিকভাবে কত কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার, তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা জানেন। প্রধানমন্ত্রীকে মা সম্বোধন করে তিনি আরও লিখেন, প্রধানমন্ত্রীর আহব্বানে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধীদের আয়কর প্রদানে বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন। এমনকি প্রতিবন্ধী মানুষদের পিতা-মাতাদের আয়কর প্রদানে বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছেন। তাই গৃহকর প্রদানেও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠি ও তাদের পিতা-মাতার পৌরকর মওকুফ করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
এই বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে ইরফানের বাবা মো. আইয়ুব পূর্বদেশকে বলেন, প্রতিবন্ধী মানুষদের জীবন অনেক কষ্টের। যার একজন প্রতিবন্ধী সন্তান রয়েছে, সে জানে জীবন কত কঠিন। পৌরকর প্রদানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ কোনো সুবিধা নেই। যদিও আয়কর প্রদানের ক্ষেত্রে রয়েছে। সেক্ষেত্রে পৌরকরও যদি এই বিশেষ সুবিধা রাখা হয় প্রতিবন্ধী ও তাদের পিতা-মাতার পথচলায় অনেক সহায়ক হবে।
এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিষয়টি আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়। এই বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা পূর্বদেশকে বলেন, আমাদের সরাসরি পৌরকর আদায়ের আইনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ কোনো সুবিধার কথা উল্লেখ নেই। তাই আমরা বিষয়টি নিয়ে কি করণীয় হতে পারে তা জানতে চেয়ে মন্ত্রণালয়ের কাছে লিখবো। তখন মন্ত্রণালয় যা নির্দেশনা দেয়, সেটাই আমরা বাস্তবায়ন করবো।