চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানিতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি দেখা গেছে। ইউরোস্ট্যাটের সা¤প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মাত্র তিন মাসে রফতানি আয় ২৯.০৬ শতাংশ বেড়ে ৫৯৭৬.০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪৬৩০.৫২ মিলিয়ন ডলার। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
ইউরোস্ট্যাট জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট পোশাক আমদানি ১৬.৮৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৬৫২.১৩ মিলিয়ন ডলারে। পরিমাণগত দিক থেকে আমদানি বেড়েছে ২০.২৫ শতাংশ, যা এ খাতে ক্রয়াদেশ পুনরুদ্ধারের একটি পরিষ্কার ইঙ্গিত। তবে গড় ইউনিট মূল্য ২.৮৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা বাজারে দামের চাপ এবং প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে চিত্রটি আরও উজ্জ্বল। রফতানির পরিমাণে ২৪.৬৪ শতাংশ এবং ইউনিট মূল্যে ৩.৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার ফলে মোট আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই তিনটি সূচকের একসঙ্গে উন্নয়ন একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে, যা শুধু উৎপাদন নয়, পণ্যের গুণমান ও বাজারমূল্যের উন্নয়নকেও তুলে ধরে। ইইউতে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের পাশাপাশি অন্যান্য দেশও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বলছে—চীনের প্রবৃদ্ধি ২৪.৯৪ শতাংশ (রফতানি আয় ৬৬৭২.১৮ মিলিয়ন ডলার), ভারতের প্রবৃদ্ধি ২৪.০৮ শতাংশ (১৪৪৪.১৮ মিলিয়ন ডলার), পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ২৮.৭৩ শতাংশ (১০৮৪.৬০ মিলিয়ন ডলার), কম্বোডিয়ার প্রবৃদ্ধি ৩৩.৪৫ শতাংশ (১১৬৩.৫৯ মিলিয়ন ডলার)। তবে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে তুরস্কে, সেখানে রফতানি ৪.১৪ শতাংশ হ্রাস পেয়ে নেমে এসেছে ২৩৬৯.৫৯ মিলিয়ন ডলারে। চীন এখনও ইইউ’র সবচেয়ে বড় পোশাক সরবরাহকারী দেশ হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে। দেশটি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২৪.৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ৬৬৭২.১৮ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি করেছে। তবে প্রবৃদ্ধির দিক থেকে বাংলাদেশ চীনের চেয়েও এগিয়ে। বাংলাদেশের পর তৃতীয় অবস্থানে আছে তুরস্ক, তবে দেশটির রফতানিতে ৪.১৪ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে। ভারত, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনাম উল্লেখযোগ্য হারে রফতানি বাড়িয়েছে। এর মধ্যে কম্বোডিয়ার প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি, ৩৩.৪৫ শতাংশ। অন্যান্য দেশের মধ্যে পাকিস্তান ২৮.৭৩ শতাংশ, ভারত ২৪.০৮ শতাংশ, ভিয়েতনাম ১৮.০৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ১৩.৩১ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়া ৮.৪৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। মরক্কোও সামান্য, ৫.১৮ শতাংশ হারে রফতানি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। সার্বিকভাবে ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৈরি পোশাক আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪,৬৫২.১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬.৮৪ শতাংশ বেশি।