নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ থেকে পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেনে তৈরি পোশাকের ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিনিধিদের সংগঠন বায়ার্স ফোরাম। এসময় দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন তারা। এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চলমান পরিস্থিতি রপ্তানি আদেশের পণ্য সময়মত হাতে পাওয়ার বিষয়ে অস্বস্তিতে আছেন বলেও জানান বিদেশি ক্রেতারা।
গতকাল সোমবার রাজধানীর বিজিএমইএ কার্যালয়ে বায়ার্স ফোরামের সাথে বৈঠক শেষে এসব কথা জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি। বৈঠকে এইচ অ্যান্ড এম, মার্ক অ্যান্ড স্পেন্সার, নেক্সট, ওভিএসসহ ১০টি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেন, দেশে ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি সচল করাসহ, নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় গত ১৮ জুলাই রাতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়। ফলে, আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রেতাদের সঙ্গে বন্ধ ছিল যোগাযোগ। এতে, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ণ হয়েছে বলেও জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।
তিনি জানান, চার-পাঁচদিন কারখানা বন্ধ থাকার কারণে আমরা যদি পণ্যটা যথাসময়ে রপ্তানি করতে না পরিনি, তারপরও বিদেশি বায়াররা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন তারা ক্রয়াদেশ বাতিল করবেন না, কোনো ডিসকাউন্টও দিবে না। এমনকি এআরও দিবে না বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এসময় বিজিএমইএ সভাপতি চলমান পরিস্থিতিতে কারখানাগুলোর প্রতি সহানুভ‚তিশীল থাকার জন্য ক্রেতাদের আহবান জানান। আর অপ্রত্যাশিত বিলম্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর ওপর যেন বাড়তি কোনো চাপ তৈরি না হয়, সে বিষয়ে ক্রেতাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বিজিএমইএ ক্রেতাদের আশ্বস্ত করে বলেছে, শিল্পের গতি দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য সার্বিক পরিস্থিতি অনুক‚লে আনতে বন্দর কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনাকাঙ্কিত পরিস্থিতি এবং তা নিয়ন্ত্রণে সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে বিজিএমইএ।
এসময় শিল্পের স্বাভাবিক কর্মকান্ড চলমান রাখতে এবং সরবরাহ চেইন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরা হয় বৈঠকে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংকট শুরুর প্রথম দিন থেকেই পোশাক শিল্পে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরে সঙ্গে বৈঠক করে দ্রæততম সময়ে কারখানা খুলে দেওয়া, ইন্টারনেট সেবা চালু ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুনরায় কারখানাগুলো খুলে দেওয়া গেছে, শুরু হয়েছে উৎপাদন কার্যক্রমও।
বৈঠকে বিজিএমইএ প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আরশাদ জামাল দীপু, আব্দুল্লাহিল রাকিব, রকিবুল আলম, পরিচালক আশিকুর রহমান তুহিন, শোভন ইসলাম, ইমরান আহম্মেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।