পেকুয়া প্রতিনিধি
পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়ায় বন বিভাগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক সরকারি গাছ কেটে লুট ও বন বিভাগের জায়গা দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করছে স্থানীয় সন্ত্রাসী বেলাল উদ্দিন প্রকাশ জঙ্গ বেলাল। বন বিভাগের জায়গা দখল, সামাজিক বনায়ন ও পাহাড়ের গাছ কেটে বিক্রি করা তার অন্যতম পেশা। তাদের লুটের কারণে সামাজিক বনায়ন বলতে এলাকায় কিছু আর অবশিষ্ট নেই। এখন বেলাল ও তার ছেলেরা প্রতিনিয়ত বন বিভাগের গাছ কেটে সাবাড় করছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, জঙ্গ বেলাল ও তার ছেলেদের কাছে স্থানীয় বন বিভাগও অসহায়। বন বিভাগের লোকজন তার ভয়ে তটস্থ থাকে। তাকে মামলা দিয়েও দমন করতে না পারায় ইচ্ছেমতো বন বিভাগের জায়গায় প্রতিদিন নতুন নতুন ঘরবাড়ি তৈরি করছে।
জানা যায়, পহরচাঁদা বিট থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে দিনদুপুরে বন বিভাগের জায়গা দখল করে সম্প্রতি ইটের দালান তৈরি করেছেন বেলাল। এতে বন বিভাগ কোনো বাধা দেয়নি। খবর পেয়ে গত ২৮ মার্চ সাংবাদিকেরা এ সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের মারধর করেন বেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে তালহা। সাংবাদিকেরা তৎক্ষণাৎ পার্শ্ববর্তী হারবাং পুলিশ ফাঁড়িতে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এলাকাবাসী জানায়, চকরিয়ার বরইতলী পহরচাঁদা হাফালিয়া কাটা মোরাপাড়ায় বসবাসরত বেলাল উদ্দিন প্রকাশ জঙ্গ বেলালের অত্যাচার ও নির্যাতনে এলাকাবাসীও অতিষ্ঠ। ছোটবেলা থেকেই মানুষকে মারধর করা, অন্যায় অত্যাচার করা তার নেশা। সে প্রকাশ্যে স্থানীয় অধিবাসী আবদুল মজিদকে গুলি ও মারধর করে জেলে যান। জেল থেকে এসে নিজ মা-বাবাকে মারধর করে মারাত্মক জখম করেন। তখন বাবা নিজেই মামলা করে আবারও জেলে দেন এবং তার থেকে দূরে থেকে মৃত্যুবরণ করেন। কিছুদিন আগেও আপন চাচাতো বোন মোহছেনারা বেগম প্রকাশ মছুকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন এবং তার স্বামীকে মেরে হাত ভেঙে দেন। এরপর নেজাম উদ্দিনের জীবন্ত গরু কেটে ফেলে এবং অসহায় মোবারকের বৌকে ও নুরুল হোসেনের মাকে দিনেদুপুরে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত বেলালকে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার বড় ছেলে তোহাকে ফোন করলে সে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে এক মহিলাকে দিয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করায়।
এ ব্যাপারে বারবাকিয়ার রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিব বলেন, বেলাল উদ্দিনের নামে ৩১/বাবা ও ৩২/বাবা অব ২০২২-২৩ ধারায় দুটি মামলা রয়েছে। এর আগের আরও দুটি মামলাও রয়েছে যেগুলো বর্তমানে গ্রেপ্তারি পারোয়ানা জারি রয়েছে কিন্তু পিতার নাম সঠিক না থাকায় সে গ্রেপ্তার হচ্ছে না। আমরা মামলা দুটি দ্রæত পিতার নাম সংশোধনীতে পাঠাবো। নতুন করে বনবিভাগের জায়গা দখলে নিয়ে দালান তৈরির ব্যাপারে জানতে চাইলে রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, বেলাল উদ্দিন একজন সন্ত্রাসী লোক। আমরা তার ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। শীঘ্রই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।