পেকুয়ায় সড়কে মুহূর্তেই ঝরে গেল ৫টি তাজাপ্রাণ

1

সোহেল আজিম, পেকুয়া

কক্সবাজারের পেকুয়ায় ডাম্প ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরও ৩ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে এবিসি (আনোয়ারা-বাঁশখালী-চকরিয়া) আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা ও হাজীর বাজার এলাকার মধ্যবর্তী অবস্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, হাটহাজারী উপজেলার মধ্য মাদার্শা এলাকার ফিরোজ আহমদ (৩৯), তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার (২৯), তাদের ছয় মাস বয়সী ছেলে জাহেদুল ইসলাম, অটোরিকশা চালক পেকুয়া ধনিয়াকাটা গ্রামের মৃত ছৈয়দ আলমের ছেলে মনিরুল মান্নান (২৩) ও পেকুয়া উজানটিয়া ইউনিয়নের সোনালী বাজার গ্রামের মাওলানা বজল আহমদের ছেলে মাওলানা আব্দুর রহমান (৩২)। আহতরা হলো নিহত ফিরোজ-শাহিনার অপর দুই সন্তান শাহেদ (৭) ও জান্নাত (৪) এবং নারায়নগঞ্জের আল আমিন। তাদের মধ্যে আল আমিন পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং শাহেদ ও জান্নাতকে চকরিয়া ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পেকুয়া থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে হাজী বাজার এলাকায় বিপরীতমুখী ডাম্প ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাতে অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার যাত্রী ও চালকের মৃত্যু হয়।
ওসি মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা আরও বলেন, লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। ট্রাকের পলাতক চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।
জানা যায়, সংঘর্ষে ডাম্প ট্রাকের চাকায় সিএনজিটি পিষ্ঠ হয়ে ঘটনাস্থলেই সিএনজিচালক মনিরুল মান্নান, মাওলানা আবদুর রহমান ও শাহিনা আক্তার নিহত হন। পরে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফিরোজ আহমদ ও তার শিশুপুত্র জাহেদুল ইসলাম চকরিয়া নেওয়ার পথে মারা যায়। আহমদ ফিরোজ চকরিয়া বিসমিল্লাহ মটরসে চাকরি করতেন।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, নিহতদের স্বজনদের হাতে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আহতরা বর্তমানে শংকামুক্ত আছেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক সালাহউদ্দিন পেকুয়া হাসপাতালে এসে নিহতদের পরিবার প্রতি ৩৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে নগদ অনুদান প্রদান করেন। তাছাড়া পেকুয়ার আবদুল হামিদ নামের এক প্রবাসী নিহতদের প্রত্যেককে নগদ ৫ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করেন।
চকরিয়া বিসমিল্লাহ মটরসের সত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী জানান, দুর্ঘটনায় নিহত ফিরোজ ১০ বছর ধরে তার কাছে চাকরি করে আসছেন। দুর্ঘটনার পরপরই তাকে ফিরোজ ফোন করায় তিনি পেকুয়া সরকারি হাসপাতালে পৌঁছে দেখেন গুরুতর আহত ফিরোজ রক্তাক্ত অবস্থায় জরুরি বিভাগের ওয়ার্ডের বাইরে মেঝেতে পড়ে আছেন। তাকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত কোন চিকিৎসা দেয়া হয়নি। ফিরোজের দুই শিশু সন্তানকে চকরিয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্যে পাঠিয়ে দেওয়ার পরই ফিরোজ মারা যান।