আসাদুজ্জমান রিপন
অন্যরকম এক বিনিময়। যেখানে থাকছে না কোনো ফি। পড়া শেষ, এমন বই জমা দিয়ে নিতে পারবেন নতুন বই। পুরনো বই বছরের পর বছর ঘরে পড়ে থাকে। এসব বই অন্য কারও প্রয়োজন হতে পারে। এ ধারণা থেকে চট্টগ্রামের জামালখান মোড়ে চালু হচ্ছে ‘বুক একচেঞ্জ কর্ণার’। যেখানে আপনার পড়া বই জমা দিয়ে নিতে পারবেন নতুন বই।
আজ শনিবার সকালে এ বই বিনিময় কর্ণারের উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ বই বিনিময় কর্ণারটি অন্ত্যমিল প্রকাশনীর তত্ত্বাবধানে চলবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়ন করছে ক্লিন বাংলাদেশ।
এ বই বিনিময় কর্ণারে থাকবে সবধরনের বই। কথাসাহিত্য, কবিতা, রাজনীতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ক্যারিয়ার, শিশুসাহিত্য ও ম্যাগাজিন, একাডেমিক বইসহ সাহিত্যের সব শাখার সকল বই থাকবে। তবে, দেশবিরোধী, জঙ্গীবাদ, নিষিদ্ধ বই রাখা হবে না। যা নিজের মানুষ্যত্ববোধ জাগাতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি বাসায় ফেলে রাখা অপ্রয়োজনীয় বই অন্য আরেকজন পড়তে পারবেন-এটিও অন্যতম উদ্দেশ্য।
মনের ক্ষুধা নিবারণের অন্যতম মাধ্যম বই। মানুষকে মননশীল হতে সাহায্য করে তেমনি আলোকিত হিসেবে গড়ে তোলার অন্যতম উপদান বই। বই মানুষকে অনুসন্ধিৎসু করে এবং একটি গভীর অনুভূতি দেয়। সমাজের প্রতিটি সমস্যা সমাধানে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা তৈরি করে দেয়।
উদ্যোক্তারা জানান, আমাদের দেশে বই বিনিময় সংস্কৃতি তেমন গড়ে উঠেনি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে বইসেলফ রয়েছে। অবসর সময়ে সবাই বই পড়ে। আমরা এ অভ্যাস তৈরি করার চেষ্টা করছি মাত্র। জামালাখানে অনেককে দেখা যায়, সন্তানকে স্কুলে দিতে এসে অনেকে বসে থাকেন। অলসভাবে সময় কাটান। আমরা এ সময়ে যাতে একটা বই পড়তে পারেন সে চেষ্টা করছি। যাতে তাঁদের সময় সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেন।
ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শাওকাত হোসেন জনি বলেন, এ জায়গায় আগে একটা পাঠাগার ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সেটি নষ্ট হয়ে যায়। পরে আমরা সিটি কর্পোরেশনকে জানিয়ে সেটিকে সংস্কার করে একেবারে নতুন আঙ্গিকে চালু করছি। আমরা ওয়েবসাইট তৈরি করেছি। সেখানে সবধরনের তথ্য দেওয়া থাকবে। পাশাপাশি একজন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিদিন সকাল ৯ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।
তিনি আরো বলেন, ‘উন্নতদেশের মত আমাদের দেশেও বইপড়ার অভ্যাস চালু করতে চাই। অনেকের পড়া বই বাসায় পড়ে থাকে সেটি আমরা বই বিনিময়ের মাধ্যমে অন্যের হাতে তুলে দিতে চাই’।
অন্ত্যমিল প্রকাশনীর প্রকাশক তানভীর রিসাত বলেন, এখানে প্রায় হাজারো বই রাখার জায়গা আছে। এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ৫’শটি বই সংগ্রহ করেছি। সব নতুন বই। আরো ৫’শ বই দরকার। যে কেউ চাইলে আমাদের বই দিয়ে যেতে পারে। সকল ধরনের তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া থাকবে।