পুঁজিবাজার উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে নির্দেশনা চাই

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেছেন, একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পুঁজিবাজারের গুণগত স¤প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ কৌশল নির্ধারণ করে দিকনির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গতকাল রবিবার সিএসই’র চট্টগ্রাম কার্যালয়ে প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়ন ও গুণগত সম্প্রসারণে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পক্ষে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী কিছু প্রস্তাবণা তুলে ধরেন।
সিএসই চেয়ারম্যান বলেন, গত কয়েক বছর ধরে নিম্নমুখি ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত কর প্রত্যাহার করা জরুরি। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মূলধনী লাভের ওপর কর প্রত্যাহার এবং নতুন করারোপ থেকে বিরত থাকার সুপারিশ আমরা করেছি। সর্বোপরি আমরা চাই, জাতীয় বাজেটে স্টক এক্সচেঞ্জের মার্কেট বৃদ্ধিতে যেন কৌশল থাকে। বিনিয়োগকারীরা যেন শেয়ারবাজার থেকে ভালো মুনাফা অর্জন করে। পাশাপাশি আমরা চাই পুঁজিবাজারে আরও কোম্পানি তালিকাভুক্ত হোক।
এ সময় সিএসই ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটের একটা জুতসই স¤প্রসারণ দরকার। আর সেই স¤প্রসারণের জন্য যে কৌশল সেটা বাজেট কাঠামোর মধ্যে নিতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের কর্পোরেট ফিন্যান্সিং ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। যদি ক্যাপিটাল মার্কেটকে একটা টেকসই অবকাঠামো দিতে না পারি, তাহলে ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা সেটা কমানো সম্ভব হবে না। আর সেখান থেকে সরে আসতে গেলে একটি শক্তিশালী বাজার কাঠামো দরকার। আর শক্তিশালী বাজার কাঠামো করতে গেলে ক্যাপিটাল মার্কেটের যে উইংগুলো আছে সেগুলো শক্তিশালী করতে হবে।
সাইফুর রহমান আরও বলেন, ইকুইটি মার্কেট নির্ভর শেয়ারবাজার হওয়ায় বাজারে যেমন অনাকাক্সিক্ষত অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, তেমনি এটি শেয়ারবাজার স¤প্রসারণের অন্তরায়। এই লক্ষ্যে কার্যকর কৌশলের মাধ্যমে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতি সমসাময়িক কান্ট্রিগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মার্কেট ক্যাপ জিডিপি রেশিও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্থানীয় এবং বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহিত করার একটি প্যারামিটার হিসেবে বিবেচিত হবে।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করে সিএসই পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি দেশীয় ও বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে বøু বন্ড ও গ্রিন বন্ডের বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়ানোর উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতিটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাংক নির্ভর হয়ে পড়েছে। এজন্য ব্যাংকের লিকুইডিটি কমে গেছে। অথচ পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ি পোর্ট, এলএনজি টার্মিনাল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলোর অর্থায়নের জন্য যদি সরকার ক্যাপিটাল মার্কেট নির্ভর হতো, তাহলে আমরা টাকা যোগান দিতাম। টোল থেকে বা রেভিনিউ থেকে প্রফিট নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দিতে পারতাম। এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরাও নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারতো।
এ সময় সিএসই পরিচালক নকিব উদ্দিন খান, আক্তার পারভেজ হিরু এবং কোম্পানি সেক্রেটারি রাজিব সাহাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।