নিজস্ব প্রতিবেদক
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় কোন ধরনের চাপ নেই। স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা সভায় একটা সিদ্ধান্ত দিচ্ছি। এবার সেগুলোর বাস্তাবায়ন দেখতে চাই। চট্টগ্রাম শহরের পাহাড় রক্ষায় এটাই ভালো সময়।’ গতকাল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ড. মো. জিয়াউদ্দীন।
প্রায় পাঁচ মাস পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ৩১তম সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব সাদি উর রহিম জাদিদ, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক সোনিয়া সোলতানা, পরিবেশ ও সংবাদকর্মী শফিকুল ইসলাম খানসহ বিভিন্ন অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, এখন পাহাড়ধস আমাদের জন্য এলার্মিং। এটি আমরা প্রায় সব জায়গায় বলছি। এবার এ বিষয়ে একটা ফলাফল দেখকে চাই। সেক্ষেত্রে যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন তা করা হবে। আমরা সভা সেমিনারে আলোচনা করছি, বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এবার একটা ফলাফল দেখতে চাই। পাহাড়ে অবৈধ বসতিতে অভিযানের মাধ্যেমে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে পরবর্তীতে আবার বিদ্যুৎ সংযোগ চলে আসে। পরিবেশকর্মীরা অভিযোগ করেন, বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে অনৈতিক উপায়ে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ চলে আসে। এমন অভিযোগের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী। তিনি বলেন, উপরমহল থেকে চাপটা আসে সরকারি দফতরের উপর দিয়ে। যত অনিয়ম হয় সবগুলোর অনুমোদন সেবা সংস্থাগুলো দিয়ে থাকে। তারা পার পেয়ে যায়। আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাই যারা অবৈধ অনুমোদন দিবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটা উদাহারণ সৃষ্টি হবে। তাহলে একদিন আমারও ভয় থাকবে আমাকে নিয়ে টানাটানি হবে।
বিভাগীয় কমিশনার সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিডিএ, রেলওয়ে প্রতিনিধিদের অবৈধ বিষয়ে জানতে চান। এ সময় অবিলম্বে সেবা সংস্থাগুলোকে অবৈধ সংযোগের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাগিদ দেন। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ভূমি শ্রেণি পরির্বতন করা পরিকল্পিত অপরাধ। পাহাড় শ্রেণিকে নাল শ্রেণিতে পরির্বতন করে পেলে। এটা ঠেকানো কোন উপায় নেই।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে পাহাড়ধসের পর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। পদাধিকারবলে এই কমিটির আহব্বায়ক বিভাগীয় কমিশনার। সদস্যসচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পুলিশ, র্যাব, ওয়াসা, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি এই কমিটির সদস্য।