পাকিস্তানের ঋণ ঠেকানোর ‘চেষ্টায়’ ভারত

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

পাকিস্তানকে দেওয়া ঋণ ‘পুনর্বিবেচনা’ করে দেখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) আহবান জানিয়েছে ভারত। ভারতের সরকারি এক কর্মকর্তার বরাতে গতকাল শুক্রবার এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার মধ্যে এ খবর সামনে এলো।
২৬ জন নিহত হওয়ার ওই ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। তাদের এ বিরোধ শেষমেশ সামরিক লড়াইয়ে গড়ায় কিনা, এখন সে আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। নয়া দিল্লি বলছে, পেহেলগামের গত সপ্তাহের ওই হামলায় জড়িতদের মধ্যে তিনজনকে তারা শনাক্ত করতে পেরেছে, যাদের দুজন পাকিস্তানের নাগরিক। ইসলামাবাদ অবশ্য নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের
হামলার পর সিন্ধু নদীর পানি বণ্টনের গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় ভারত। দুই দেশ একে অপরের জন্য নিজেদের আকাশসীমাও বন্ধ রেখেছে। গত বছর আইএমএফের কাছ থেকে ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ নিতে চুক্তি করে পাকিস্তান। এর বাইরে গত মার্চে দেশটিকে ‘জলবায়ু সহনশীলতা’ খাতে ১৩০ কোটি ডলার দিতে রাজি হয় আইএমএফ। ৩৫ হাজার কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশ পাকিস্তানের জন্য এ ঋণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পাকিস্তান বলছে, আইএমএফের ঋণ তাদের খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে ভ‚মিকা রেখেছে। ভারতের ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, নতুন ঋণ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আইএমএফের কাছে নয়া দিল্লি উদ্বেগ জানিয়েছে। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার কথাও বলেছে তারা।
রয়টার্স লিখেছে, এ বিষয়ে তারা আইএমএফ ও ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু কেউ তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেয়নি। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীর উপদেষ্টা খুররাম শেহজাদ বলেছেন, আইএমএফের ঋণ প্রকল্প ‘সঠিক পথেই’ আছে। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘সবশেষ পর্যালোচনাটি ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং আমরা পুরোপুরি সঠিক পথেই আছি’।
ওয়াশিংটনে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাকিস্তানের ‘অত্যন্ত গঠনমূলক সভা’ হয়েছে বলেও দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় ৭০টি বৈঠক করেছি। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় পাকিস্তানে বিনিয়োগ ও সহায়তার আগ্রহ অনেক বেশি’।
পেহেলগাম হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনায় নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও, যারা দুই দেশকে ‘শান্ত’ থাকার আহবান জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ওয়াশিংটন আশা করে, পাকিস্তানভিত্তিক হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে ইসলামাবাদ নয়া দিল্লিকে সহযোগিতা করবে।
মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের পুরোটাই নিজেদের বলে দাবি করে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও ইসলামি রাষ্ট্র পাকিস্তান। যদিও তারা কাশ্মীরের আলাদা আলাদা অংশ শাসন করে। নয়া দিল্লির অভিযোগ, ভারতীয় কাশ্মীরের বিদ্রোহীদের ১৯৮৯ সাল থেকে পাকিস্তান সমর্থন দিয়ে আসছে। কিন্তু পাকিস্তানের ভাষ্য, তারা কাশ্মীরের জনগণকে কেবল ক‚টনৈতিক ও নৈতিক সহযোগিতাটুকুই দেয়।