পূর্বদেশ ডেস্ক
দুদেশের সম্পর্ক মজবুত করতে পাকিস্তানকে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে বলেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে একাত্তরে গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা এবং প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণও চেয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে বৈঠকে এমন আলোচনা হওয়ার কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। খবর বিডিনিউজের
বৈঠকের পর বিকালে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পাকিস্তানের সাথে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। যেমন- আটকেপড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রদান, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রেরিত বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া। আমরা বলেছি, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা পাকিস্তানের সাথে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়সমূহের দ্রæততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির মাধ্যমে একটি মজবুত, কল্যাণমুখী ও ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য পাকিস্তানের সহযোগিতা কামনা করি এবং এই লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি।’
এক্ষেত্রে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কী ছিল, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ‘সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছেন’। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘তারা যেটা বলেছেন যে, বিষয়টা নিয়ে তারা এনগেইজড থাকবেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় থাকবেন তারা, সামনের বৈঠকগুলোতে।’
দীর্ঘদিন পর এই বৈঠক হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, পাকিস্তানের সাথে আজকে যে বৈঠকটা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটি নিয়মিত বৈঠকই হওয়ার কথা। কিন্তু এই বৈঠক সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১০ সালে। কাজেই ২০১০ সালের দেড় দশক পরে প্রথম যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই বৈঠকে আমরা আশা করি না যে, সমস্যাটা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের দিক থেকে এ বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার একটা সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছেন।’
ক্ষতিপূরণের অর্থের পরিমাণের বিষয়ে এক প্রশ্নে জসীম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কাছে যে হিসাবটা আছে, সেখানে দেখানো আছে যে, বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক ডেপুটি চেয়ারম্যানের একটা হিসাব অনুযায়ী, (এটা) ৪ বিলিয়ন ডলার। আরেকটা হিসাবে বলা আছে, ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন। আমরা আজকের আলোচনায় এই ফিগারটাই বলেছি। এটা একটা। আরেকটা হচ্ছে, ১৯৭০ সালের নভেম্বরে যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়, সেখানে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্র এবং সংস্থা ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার সমপরিমাণ অর্থ দান করেছিল, সেটাও আমরা এই বৈঠকে হিস্যা চেয়েছি।’