চলমান পাঁচটি বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে ১৮ হাজার ১৫০ চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ দেওয়ার রূপরেখা দিয়েছেন জনপ্রশাসন সচিব মোকলেস উর রহমান। গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গেজেট হয়ে যাওয়া ৪৩তম বিসিএস থেকে শুরু করে আসন্ন ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে এসব নিয়োগ দেওয়া হবে।
শিগগিরই ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, এ বিসিএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ৩ হাজার ৪৮৭টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। খবর বিডিনিউজের।
সচিব বলেন, ৪৩তম বিসিএসে ২০৬৪ জনের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি তাদের যোগদানের তারিখ নির্ধারিত আছে। অধিকতর স্বচ্ছতার স্বার্থে গোয়েন্দা সংস্থা- এনএসআই ও ডিজিএফআই এর মাধ্যমে অধিকতর যাচাই-বাছাই চলমান আছে।
৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের সময় ৪৪তম বিসিএস এর মৌখিক পরীক্ষা চলমান ছিল। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১১ হাজার ৭৩২ জন। এরমধ্যে ৩৯৩০ জনের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে গত ২৫ আগস্ট ওই মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। স¤প্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর ‘অধিকতর স্বচ্ছতার স্বার্থে’ আগে নেওয়া ৩৯৩০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। এখন ৪৪তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব প্রার্থীর, অর্থাৎ ১১৭৩২ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নতুন করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সচিব বলেন, ৪৫তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১২৭৮৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছিল। প্রথম পরীক্ষকের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন শেষে দ্বিতীয় পরীক্ষকের মূল্যায়নের কাজ শেষের পথে ছিল।
সম্প্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে ‘স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে’ এ লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়ে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়।
৪৬তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল গত ৯ মে প্রকাশিত হয়। তাতে ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়।
এক্ষেত্রে ‘সম্ভাব্য বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে’ নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে সমান সংখ্যক, অর্থাৎ ১০ হাজার ৬৩৮ জনকে যোগ করে মোট ২১ হাজার ২৭৬ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়।
সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার জারি করা হবে বলে জানান সচিব। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে প্রথম এই বিসিএসের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ৩৪৮৭টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
সচিব জানান, ৪৩তম বিসিএসে ক্যাডার পদে ২০৬৪ জন, ৪৪তম বিসিএসে ১৭১০ জন, ৪৫তম বিসিএসে ২৩০৯ জন, ৪৬তম বিসিএসে ৩১৪০ জন এবং ৪৭তম বিসিএসে ৩৪৮৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এ ছাড়া নন-ক্যাডার পদে ৪৩তম বিসিএস থেকে ৬৪২ জন, ৪৪তম বিসিএসের ১৭৯১ জন, ৪৫তম বিসিএসে ১৫৭০ জন, ৪৬তম বিসিএসে ১১১১ জন, ৪৭তম বিসিএসে ৩২৫ জনসহ ক্যাডার ও নন ক্যাডার পদে ১৮১৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হতে কতদিন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে সচিব বলেন, যত দ্রæত সম্ভব নিয়োগ প্রক্রিয়া সমাপ্ত করার নির্দেশনা দিয়েছি। সবশেষ যে ৪৭ তম বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার আসছে, সেখানে দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলেছি আমরা।