পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা সমগ্র দেশবাসীর কর্তব্য

5

মাসব্যাপী ছাত্র-জনতার কোটা বিরোধী আন্দোলনের ফলে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। এর ফলে দেশে বর্তমানে একটা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়, যার প্রেক্ষিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আন্দোলনকারীরা সফল হয়েছে। তাদের আন্দোলনের সহায়তাকে কেন্দ্র করে কিছু অতি উৎসাহী জনতা দেশের পুলিশবক্স, থানা এবং কিছু কিছু রাজনৈতিক নেতাকর্মীর ঘরেও নাশকতার হুলিখেলায় মত্ত হতে দেখা যাচ্ছে। যাতে দেশে সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। যা কোন দেশপ্রেমিক নাগরিকের কাম্য নয়। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমানে দেশ পরিচালনার জন্য একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত দেশের জনসাধারণকে ধৈর্য্যরে পরিচয় দিতে হবে। দেশ কারো একার নয় বলেই ছাত্রজনতার প্রতিবাদের মুখে ক্ষমতাসীনদের পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে হয়েছে। দেশ সকল বাংলাদেশি নাগরিকের। দেশের সম্পদ ধ্বংস হলে তা আগামীর সরকারের জন্য একটা কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করবে। জনগণের উচিত যারা দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করবে তাদের সহযোগিতা করা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা স্বাভাবিক রাখা প্রত্যেক দেশপ্রেমিক নাগরিকের কর্তব্য। ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এমতাবস্থায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা এবং দেশের সম্পদ সংরক্ষণ করা দেশের সকল নাগরিকের প্রধান দায়িত্ব। যুগে যুগে দেশে সরকার এসেছে এবং সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখনো স্বাধীন বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে বর্তমান আছে। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, স্বচ্ছ বিচার বিভাগ, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গি এবং দেশের মানুষের নৈতিক ও মানবিক চরিত্র যে কোন দেশকে মর্যাদার আসনে আসীন করতে পারে। আমরা জাতি হিসেবে বীরের জাত। বাঙালির বীরত্বের গাঁথা ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে আছে। এ জাতি কোন অন্যায়, অবিচার ও স্বৈরাচারকে মেনে নেয়নি। তবে দেশ যে অবস্থায় আছে তা হতে আরো উন্নত ও মানবিক, নাগরিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হলে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সর্বস্তরের আন্দোলন সফল হয়েছে বলেই বিবেচিত হবে। দেশের মানুষ চায় দ্রুত দেশের প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক। জনজীবন স্বাভাবিক হোক দ্রæত। পেশাজীবীরা তাদের পেশায় ফিরে যাক। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বস্তি ফিরে আসুক। তার জন্য গণতান্ত্রিক দেশের নিয়ম অনুসারে দ্রুত একটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান এবং অন্তবর্তিকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব। প্রথমে যে কাজটি করা দরকার তা হলো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং চলমান পরীক্ষায় যাতে যথাসময়ে সম্পন্ন করে ফলাফল প্রকাশ করা যায় দ্রুত সে ব্যবস্থা করতে হবে। আর নাগরিকদের দায়িত্ব, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করা। সবার আগে দেশ। দেশের স্বার্থে দেশের সকল নাগরিক ও সকল পক্ষকে ধৈর্য্যরে সাথে কাজ করা জরুরি মনে করে দেশপ্রেমিক শান্তিপ্রিয় নাগরিক সমাজ।