পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে

1

দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টার পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে একটা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। একদিনে এতগুলো ঘটনা কাকতালীয় হতে পারে না। এই ইন্ধনের পেছনে কারা জড়িত আমরা তা তদন্ত করছি। ইন্ধন রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া। সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
চলমান অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। বড় কোনও পরিকল্পনা না থাকলে এক দিনে এতগুলো ঘটনা এটা তো কাকতালীয় নয়। আমরা মনে করছি, এখানে নানাপক্ষের পরিকল্পনা আছে। সরকার সফলভাবে প্রশাসনিক কার্যক্রম করুক, এটা অনেকে হয়তো চাচ্ছে না। আমাদের যে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার, তারা তো নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা মনে করি, পুলিশে বড় একটি পরিবর্তন এসেছে। প্রশাসনের স্থবিরতাও কাটানোর জন্য প্রশাসনেও পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছি। এই বিষয়গুলো নস্যাৎ করতে আমাদের অনেক বেশি এসব ঘটনায় ব্যস্ত রাখার জন্য, সারা দেশের দৃষ্টি এদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কিনা না আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমরা এটা তদন্ত করছি। দেশে বা দেশের বাইরে ইন্ধনে কারা জড়িত। একটি অভ্যুত্থান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা আছি। সবার ভেতরে বিপ্লবী চেতনা আছে। উত্তেজনা আছে। সেটা যাতে আমরা ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করি। জনগণের কাছে সেই আহŸান করবো। রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে অনুরোধ করবো, এ ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য। গণঅভ্যুত্থানে যে ঐক্য আমাদের মধ্যে ছিল, সরকারের কিন্তু অংশীদারত্ব সবারই রয়েছে। সেজন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা সবার কাছে প্রত্যাশা করছি।
ইন্ধন রয়েছে কিনা জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ বলেন, অনেক ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করার আগ পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। আমরা তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
ছাত্রদের কেন নিয়ন্ত্রণ করা গেলো না, এক্ষেত্রে পুলিশের কোনও দুর্বলতা রয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা নিতে তো পুলিশের দুর্বলতা ছিল। আমরা স্বীকার করছি, দুর্বলতা ছিল দেখেই ঘটনাটা সংঘর্ষের দিকে গেছে। কিন্তু পুরো পুলিশ তো একটা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সেই জায়গায় এত এত শিক্ষার্থী নেমে এসেছে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হলে সেটা আরও বেশি খারাপের দিকে যেতে পারতো। এ কারণে প্রাথমিকভাবে হয়তো পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তারা সংঘর্ষে জড়ায়নি। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এক হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পুলিশকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে রদবদল করা হয়েছে। এটা অব্যাহত থাকবে। যেখানে ব্যর্থ হবে সেখানে পরিবর্তন আনা হবে।
পরিস্থিতি কেন পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, রায়ট নিরসন করার অতীতে প্রাকটিস ছিল, সেটা করা হলে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারতো। এজন্য পুলিশ ছাত্রদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে সেই বাধা টপকিয়ে ছাত্ররা চলে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনও অ্যাকশনে যায়নি। যারা এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ঘটনা ছয়দিন আগ থেকে সূত্রপাত হয় বলে জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা দেখেছি, তিনজন নিহত হওয়ার একটি খবর রটেছিল। তবে এখনও পর্যন্ত কারও নিহত হওয়ার কোনও সংবাদ আমরা পাইনি। নানা মাধ্যমে চেষ্টা করেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠিত কোনও গণমাধ্যমেও এই ধরনের খবর আমরা পাইনি।