পতেঙ্গায় যুবককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা

1

হাটহাজারী প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল অ্যাভিয়েশনের অফিস সহকারীকে সরকারি কোয়ার্টার থেকে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিমানবন্দর সংলগ্ন নগরীর পতেঙ্গা লিংক রোড এলাকা থেকে ওই কর্মচারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খুন হওয়া ওই কর্মচারীর নাম ওসমান সিকদার (৪১)। তিনি হাটহাজারী উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক এমরান সিকদারের ছোট ভাই।
নিহত ওসমান সিকদার হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রুহুল্লা সিকদার বাড়ির মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াস শিকদারের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার পরিবারের দাবি ওসমান বুধবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে পূর্ববিরোধের জেরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
লাশ উদ্ধারের বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করেন পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান। তিনি জানান, ওসমান সিকদার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল অ্যাভিয়েশনে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বিমানবন্দর সংলগ্ন সরকারি কোয়ার্টারের বাসায় থাকতেন।
এদিকে, উদ্ধারকৃত লাশের সুরতহাল শেষে মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি খুনের ঘটনা। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই হেফাজত নেতা এমরান সিকদার বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
হেফাজত নেতা এমরান সিকদার অভিযোগ করে গণমাধ্যমে বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে তার ভাইকে খুন করা হয়েছে। মাথায় লাঠির আঘাত রয়েছে। এ ছাড়া পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বুধবার রাত তিনটার দিকে বাসা থেকে ওসমানকে ধরে নিয়ে যায় সাত থেকে আটজনের একটি দল। তিনি আরও জানান, বেশ কিছুদিন আগের ফটিকছড়ি ও ভোলা এলাকার দুই বাসিন্দার সাথে ব্যবসায়িক আর্থিক লেনদেন নিয়ে নিহত ওসমান শিকদারের মনোমালিন্য চলে আসছিল। ইতোপূর্বে ওই ঘটনার জের ধরে মাস দেড়েক আগে ওসমান শিকদারের বাড়িতে তারা হামলা চালিয়েছিল। গত সপ্তাহে বিষয়টি সুরাহাও হয়েছিল।
এরমধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় সে তার গ্রামের বাড়ি থেকে রওনা হয়ে রাতে বিমানবন্দরের সরকারি কোয়ার্টারের বাসায় উঠে। এরমধ্যে বুধবার রাত তিনটার দিকে তার ভাইকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে পূর্ববিরোধের জেরে নৃশংসভাবে হত্যা করে পতেঙ্গা লিংক রোড এলাকা ফেলে রাখে। হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শান্তি দাবি করেন এমরান সিকদার।
অন্যদিকে, বিমানবন্দরের সিভিল অ্যাভিয়েশনে অফিস সহকারী ওসমান সিকদারের নিহত হওয়ার খবর তার গ্রামের বাড়ি তথা পরিবারের সদস্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। নিহতের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। বিকেল ৫টার দিকে নিহতের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হলে এলাকার লোকজন তাকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করে। রাত সাড়ে আটটার দিকে রুহুল্লাহ সিকদার বাড়ি জামে মসজিদের প্রাঙ্গণে এশারের নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে বলে জানান হেফাজত নেতা কামরুল ইসলাম।