পটিয়ার ২১ আসামির বিরুদ্ধে পরোয়ানা

1

পটিয়া প্রতিনিধি

পটিয়ায় বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ২১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত চট্টগ্রাম। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্বশরীরে আসামিরা হাজির না হয়ে ২য় বারের মতো সময়ের আবেদন করলে আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম মানিক আসামিদের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ফোরকানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া পটিয়ার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের আসামিরা হলেন মো. এরশাদ প্রকাশ সাদ্দাম মেম্বার, সামশুল আলম প্রকাশ কারা সামশু, শহিদুল আলম, সাইফুল ইসলাম অভি, নুরুল আলম মনা, আশিকুর ইসলাম খোকন, নাজমুল ইসলাম অভি, সাদ্দাম হোসেন, দীপন বড়ুয়া, শামসুল আলম, নিউটন তালুকদার, মো. জহির প্রকাশ মাছ জহির, বরুণ তালুকদার, আব্বাস উদ্দিন ছোটন, ফরিদুল হক ফরিদ, জসিম উদ্দিন, মো. আলম, রতন মুখার্জি, প্রভাকর বড়–য়া টিটু, রক্তিম মজুমদার, ভোলা মজুমদার।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফোরকানুল ইসলাম বলেন, পটিয়ার একটি বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার মামলার ২১ জন আসামি গত ১০ মার্চ হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন পান। এরপর গত ১৫ মে আদালতে তারা সময়ের আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করে এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেন। বৃহস্পতিবার আসামিরা আদালতে স্বশরীরে হাজির না হয়ে ২য় বারের মতো সময়ের আবেদন করলে আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে ২১ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দেন।
এদিকে, গত বছরের ২৯ অক্টোবর উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা এলাকার ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বাদি হয়ে পটিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক হুইপ ও পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীসহ ১২১ জনের বিরুদ্ধে এজাহারভুক্ত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এতে আরো ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলায় হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, হুইপের দুই ছোট ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত, মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, মোজাম্মেল হক রাজধন, নুরুল হুদা, এমরান, যুবলীগ নেতা সাইফুল হাসান টিটু, মহিম, বাবর, জাবেদ সরওয়ার, কায়ছার, সাদ্দাম, সাইফুজ্জামান মানিক, আব্বাস উদ্দিন ছোটন, ছাত্রলীগ নেতা কপিল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, পটিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব, গিয়াস উদ্দিন আজাদ, ইঞ্জি. রুপক কুমার সেনসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ২১ আসামিকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আসামিরা ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে নিরীহ ব্যক্তিদের কাছে চাঁদা দাবি করে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। পরে গত বছরের ১১ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে ১-৩ নং আসামিদের নির্দেশে ৪-১৮ নং আসামিরা যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। এতে বাদি সাদ্দাম হোসেনসহ যুবদল নেতা আবুল হাসান, জাফর আহমদ, মো. রাসেল, মো. ফোরকান, সাইফুদ্দিনসহ অনেকেই আহত হয়। ১৯-১২১ নং আসামিরা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’ সহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে দিতে এলোপাতাড়িভাবে ককটেল বিস্ফোরণ করে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে। এ সময় চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার মহাসড়কের শান্তিরহাট এলাকায় আসামিরা বাদি ও ভিকটিমদের হত্যার উদ্দেশে লোহার রড দিয়ে মারধর করে। এসময় আসামিরা ভয় দেখিয়ে শান্তিরহাটের বিভিন্ন দোকান বন্ধের চাপ সৃষ্টি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দেয়। পরে বাদিসহ আহতরা প্রথমে শান্তিরহাট জেনারেল হাসপাতাল ও পটিয়া জেনারেল হাসপাতালেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়।