পটিয়ার রাজনীতিতে যার অভিভাবকত্ব ছিল সুদৃঢ়

2

নাসিরুদ্দিন চৌধুরী

গতকালের বাকী অংশ

তনি আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য ফটিকছড়ির নাজিরহাট হয়ে ভারতে চলে যেতে নির্দেশ দেন। পরে নেতারা খোঁজ নিয়ে বোয়ালখালী করলডেঙ্গা পাহাড়ে পাদদেশে মেজর জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইতোমধ্যে নিরাপদ না হওয়ায় কলেজ থেকে ক্যাম্প আবদুর রহমান গার্লস হাই স্কুলে সরিয়ে নেয়া হয়।
মার্চের ২৯ তারিখ ভারতে ট্রেনিং-এ যাওয়ার জন্য শামসুদ্দিনের নেতৃত্বে ৭০ জনের একটি দল ট্রাকে করে নাজিরহাটে উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
এরপর পরপরই ট্রেনিং এর জন্য ফাইনাল মেসেজ আসলে সামশুদ্দীন আহমদ সহ ৭০ জনের একটি ব্যাচ সর্ব প্রথম ৩১ মার্চ বিকেলে ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
তাদের টাকা পয়সার ব্যবস্থা করে দেন তৎকালীন এম এন এ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী। এ ব্যাচটি বোয়ালখালী হয়ে কর্ণফুলী পার হয়ে রাউজানের উপর দিয়ে ফটিকছড়ির নাজিরহাট ক্যাম্পে গিয়ে পৌঁছে এবং রিপোর্ট করে। সেখান থেকে তাঁরা সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোখতার আহমদের সাথে রামপড় ক্যাম্পে গিয়ে রিপোর্ট করেন।
রাঙামাটির তৎকালীন ডিসি ছিলেন এ ক্যাম্পের ইন্চার্জ। তিনি ওখান থেকে প্রথমবারের মতো ১০২ জনকে ভারতের বগাফা বি.এস. এফ ট্রেনিং ক্যাম্পে ট্রেনিংয়ের জন্য পাটিয়ে দেন। এতে পটিয়ার ৭০ জন থেকে সামশুদ্দীন সহ ৩৪ জন অংশ গ্রহণের সুযোগ পান। তারা সেখানেই ১৫ দিনের ট্রেনিং সম্পন্ন করেন। ২৫ এপ্রিল তাদের ট্রেনিং শেষ হয়। প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তারা আকাশবাণীর খবরে মুজিব নগর সরকার গঠনের খবর শুনতে পান বলে জানান অনেকেই। ট্রেনিং শেষে তারা আবার রামগড় ফিরে আসেন এ সময় তাঁদের সাথে সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইউসুফ ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রব্বান, রাউজানের আবদুল্লাহ আল হান্নান ও মির্জা বাবর সহ বিভিন্ন থানার ছাত্র নেতারাও ছিলেন। মুলতঃ এটিই ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের চট্টগ্রাম ফেরত ১নং সেক্টরের প্রথম ব্যাচ। ইতিমধ্যে সিলেট থেকে নির্বাচিত এম,এন,এ কর্ণেল আবদুর রব উক্ত ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে তাদের দেখতে পেলে তিনি মেজর জিয়া এবং রাঙামাটির ডি.সিকে বলে যান, ট্রেনিং প্রাপ্ত এসব মুক্তিযোদ্ধাদের স্ব স্ব এলাকায় পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা নিতে। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে পটিয়ার মুক্তিযোদ্ধারা অতুলনীয় সাহস ও শৌর্য বীর্যের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। পটিয়ার ছাত্র যুবকরা দলে দলে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পটিয়ায় ফিরে এসে গেরিলা যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। পটিয়ায় অবস্থান করেও স্থানীয়ভাবে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক গ্রæপ সংগঠিত হয়ে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও পটিয়ার এম.এন.এ. অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী এই দলকে পটিয়া খাদ্য অফিস থেকে চাল ও নগদ টাকা সংগ্রহ করে দেন। ৩০ মার্চ তারা নাজিরহাট থেকে রামগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে গিয়ে দেখেন ডিসি রাঙামাটির তৎকালীন ডিসি এইচ টি ইমাম ক্যাম্পের কাজ পরিচালনা করছেন আর চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়েছেন। রামগড় সীমান্তে খালের ওই পাড়ে ভারতের সাবরুম মহকুমা। এপ্রিলের সম্ভবত ১/২ তারিখ রাতের খাবার শেষে বিএসএফের ৩/৪টি ট্রাক আগরতলা রাজ্যের বগাফা বিএসএফ-এর একটি ট্রেনিং ক্যাম্পে তাদেরকে নিয়ে যায়। ওই দলে তারা সম্ভবত ১০২ জন ছিলেন। এতে পটিয়ার ৭০জন থেকে শামসুদ্দিনসহ ৩৫জন বগাফা ক্যাম্পে ট্রেনিংয়ে যাওয়ার সুযোগ পান।
১৭ এপ্রিল এক ভারতীয় সৈনিক সবাইকে ডেকে নিয়ে তার রেডিওতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবরে মুজিবনগর সরকার গঠনের খবর শোনান। তারা ১৫ দিন ট্রেনিং নেন। ২৫ এপ্রিল তাদের ট্রেনিং শেষ হয়। ট্রেনিং শেষে ট্রাকে করে তারা পুনরায় সাবরুম এসে পৌঁছেন। সেখান থেকে ফেনী নদী পার হয়ে রামগড় ফিরে আসেন। তারা যখন ফেনী নদী পার হচ্ছিলেন, তখন আরেকটি ব্যাচ ট্রেনিংয়ের জন্য বগাফা যাচ্ছিলো। সে ব্যাচে পটিয়ার হুলাইন ছালেহ-নূর কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী নাসিরুদ্দিন চৌধুরীও (সাংবাদিক এবং এই নিবন্ধের লেখক) ট্রেনিং নিতে যাচ্ছিলেন বগাফায়। শামসুদ্দিনের সঙ্গে প্রথম ব্যাচেও ট্রেনিং নিয়েছিলেন হুলাইন ছালেহ-নূর কলেজের ছাত্রলীগ নেতা আসলাম ও রফিক, হুলাইনের ইউসুফ খান এবং মনসার আবদুস সালাম ও ইউসুফ চৌধুরী (আমেরিকায় বসবাসরত)। রামগড়ে মেজর জিয়ার সাথে দেখা হয় শামসুদ্দিনের। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম ইউসুফ ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রব্বান, রাউজানের আবদুল্লাহ আল হান্নান ও মির্জা বাবরসহ বিভিন্ন থানার ছাত্র নেতারাও তখন রামগড়ে অবস্থান করছিলেন। শামসুদ্দিনরাই সম্ভবত বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা দল, যাঁরা ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়েছিলেন।
রামগড় ক্যাম্পে ২/৩ দিন বিশ্রাম নিয়ে শামসুদ্দিনের গ্রুপের ৩৪ জন মুক্তিযোদ্ধা দু’টি টিমে বিভক্ত হয়ে খাগড়াছড়ি হয়ে পটিয়া চলে আসেন। ১ম টিমের নেতৃত্বে ছিলেন নাজিরহাট কলেজের অধ্যাপক শামসুল ইসলাম (তাঁর বাড়ি পটিয়া থানার করণখাইন) ও ২য় টিমের নেতৃত্বে ছিলাম শামসুদ্দিন আহমদ। তাদের ৩৪ জনকে ৩৪টি বিভিন্ন মডেলের রাইফেল, গুলি, ৩৪টি কাফনের কাপড় ও পথ খরচের জন্য কিছু টাকা দেয়া হয়। তারা বোয়ালখালী এসে জানতে পারেন পটিয়া থানার মোড় ও বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা হয়েছে। ওই সময় প্রায় ২০ জনের অধিক নিহত হন। তারা এলাকায় এসে দেখেন পাকিস্তানী পতাকা উড়ছে। ডেঙ্গাপাড়ায় শামসুদ্দিনের এক আত্মীয়ের বাড়িতে তারা আশ্রয় নেন। পটিয়া এসে দেখেন লোকজন যেন হাওয়া হয়ে গেছে। প্রায় সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। পাক বাহিনী পিটিআই ও শান্তি কমিটির সদস্যরা রাহাত আলী হাই স্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করেছে। রাজাকার বাহিনী তৈরি হলেও পটিয়া ও সুচক্রদন্ডী ইউনিয়নে কোন ইউনিফর্মধারী রাজাকার ছিল না। আনসাররা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।
পটিয়ায় গ্রেনেড ফাটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম অপারেশন শুরু করেন শামশুদ্দিন আহমদের গ্রুপ। এপ্রিলের শেষ দিকে মেট্রিক পরীক্ষা শুরু হয়। শামসুদ্দিনের গ্রæপ মুন্সেফ বাজারে একটি বৈঠকে বসে পরীক্ষা পন্ড করার মাধ্যমে প্রথম অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। অপারেশনের জন্য চার জনের একটি গ্রুপ গঠন করা হয়। এই গ্রুপে শামসুদ্দিন ছাড়াও ছিলেন এয়ার ফোর্সের কর্মকর্তা শামসুল আলম (বাহুলী), চৌধুরী মাহবুবুর রহমান ও ডিবির ছেলে জাহাঙ্গীর। শামসুল আলমকে ২/৩টি গ্রেনেড দেওয়া হয়। তারা রাহাত আলী হাইস্কুল গেইটের বিপরীতে রাস্তার ওপাড় থেকে গেটের দিকে গ্রেনেড ছুঁড়ে মারেন। তীব্র আওয়াজে উপস্থিত সবাই পালিয়ে যায়। এর পরেও উপস্থিত ছাত্রদের নিয়ে কর্তব্যরত পাকিস্তানি কর্মকর্তারা পরীক্ষা গ্রহণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ডিবির ছেলেকে গ্রেপ্তার করে। শামসুল আলমকে বাড়িতে না পেয়ে তার বড়ভাই মাহবুবুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে স্বাধীন বাংলা বেতারে দেশবাসীর প্রতি ঘোষণা আসে পাকিস্তান সরকারকে ট্যাক্স বয়কট করার। তা সফল করতে শামসুদ্দিনের গ্রুপ গৈড়লার কমিউনিস্ট নেতা পোস্ট মাস্টার আহমদ হোসেনের বাড়িতে বৈঠক করে পটিয়া, আনোয়ারা ও বোয়ালখালী তহসিল অফিস জ্বালিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইদ্রিস (মাহাতা), প্রফেসর শামসুল ইসলাম, একেএম আবদুল মতিন চৌধুরী (খরনা), আনোয়ার উদ্দিন (পটিয়া), অনিল লালা (গৈড়লা), আবছার উদ্দিন, মাহফুজুর রহমান খান (হুলাইন) প্রমুখ। উপস্থিতি কম থাকায় পরের বৈঠকে কেলিশহর ভট্টাচার্য হাট তহসিল অফিসে হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শামসুদ্দিন, আনোয়ার, আবছার, অনিল লালা দ্বিতীয় অপারেশন সফল করেন। এর ৩/৪ দিন পর তাদের ৭/৮ জনের একটি দল পটিয়া তহসিল অফিস জ্বালিয়ে দেয়। পাঞ্জাবিরা অপারেশন করতো দিনে, আর গেরিলারা করত রাতে। পরবর্তীকালে এয়ার ফোর্সের সার্জেন্ট মহি আলম, ক্যাপ্টেন করিম, মহসিন খানসহ অনেকে এসে যুদ্ধে যোগ দিলে মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রুপ অনেক বড় হয়ে যায়। বরমার শাহজাহান ইসলামাবাদীর (মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর পুত্র) বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধের ঘাঁটি হলে তারা সেখানে চলে যায়। পাক বাহিনীর আগমনের খবর পেয়ে শামসুদ্দিনরা বুধপুরা চলে যান। খবর পেয়ে ক্যাপ্টেন করিমের টিমও তাদের সাথে যোগ দেয়। ২০/২৫ জনের মিলিত বাহিনী নিয়ে তারা জিরি মাদ্রাসা অপারেশন করেন। সেখানে নেজামে ইসলাম পার্টির নেতৃত্বে মুজাহিদ বাহিনী সংগঠিত হয়েছিল। তাদের পরাস্ত করে ১৬টি রাইফেল ছিনিয়ে নেন মুক্তিযোদ্ধারা। আগস্টের দিকে শামসুদ্দিনরা হাইদগাঁও চলে আসেন। সাতগাছিয়া মাদ্রাসায় মুক্তিযোদ্ধদের ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। পাহাড়ে বুদবুদি ছড়ায় ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। পরবর্তী সময়ে বোয়ালখালী বেঙ্গুরা দেলা মিয়ার বাড়িতে ক্যাপ্টেন করিম গ্রুপের সাথে যৌথভাবে অপারেশন সম্পন্ন হয়। ২২ সেপ্টেম্বর সুবেদার মেজর টি.এম. আলী গ্রুপের সাথে যৌথভাবে খরণা স্টেশন রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন করা হয়। ওই অপারেশনে ১০/১২ রাজাকার নিহত, ১০/১২টি রাইফেল উদ্ধার ও মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম শহীদ হন। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর বাহিনী পটিয়া সদরের বিওসি রোডে রাজাকার অপারেশনে ৩ রাজাকার খতম ও তিনটি রাইফেল উদ্ধার করে। টি.এম আলী গ্রুপের সাথে যৌথভাবে খানমোহনা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশনে ৩ রাজাকার নিহত ও ৪টি রাইফেল উদ্ধার হয়। কেলিশহর ভট্টাচার্য হাটে রাজাকার অপারেশনে গাজী আবদুস ছবুর শহীদ হন। এ সময় জেলা বিএলএফ কমান্ডার এসএম ইউসুফের চিঠি পেয়ে অক্টোবরের ২৫/২৬ তারিখ শামসুদ্দিন আসামের ডিমাগিরি যান। ৫ নভেন্বর পার্বত্য রাঙামাটি সীতান্তের জারইলপাড়া বর্ডার ক্যাম্পে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সাথে যৌথ অপারেশনে কয়েকজন পাঞ্জাবি সৈনিক নিহত, বেশকিছু অস্ত্র উদ্ধার ও মুক্তিবাহিনীর একজন শহীদ হন। পার্বত্য চট্টগ্রামের যক্ষা বাজার এলাকায় মিত্রবাহিনীর সাথে যৌথ অপারেশনে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর অনেক যোদ্ধা শহীদ হন। রাঙামাটির বরকল থানা ও শুভলং বাজারে তাঁর বাহিনী সাফল্যের সাথে অপারেশন সম্পন্ন করে।
কমান্ডার সামশুদ্দিন আহমদ গ্রুপের উল্লেখযোগ্য মুক্তিযোদ্ধারা হলেন : আনোয়ার উদ্দিন আহমদ, আফসার উদ্দিন আহমদ, আবুল বশর, আবুল কালাম, শহীদ গাজী আবদুস ছবুর, মো. ইসহাক (১), মো. ইসহাক (২), আবদুল মান্নান, শহীদ শাহ আলম, চৌধুরী মাহবুবুর রহমান, আহমদ ছফা চৌধুরী, আবু তাহের, আমির আলী, আবদুস সোবহান চৌধুরী, আহমদ নূর, এসএম নুর-উল-আলম, আমির হোসেন, একেএম আবদুল মতিন চৌধুরী, গোলাম কিবরিয়া, আবদুল লতিফ, নুরুল আবসার চৌধুরী, আবু জাফর চৌধুরী, আবুল কাসেম, জাহিদুল হকসহ অনেকে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ গঠিত হলে সামশুদ্দিন প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত উক্ত পদে অধিষ্ঠিত হন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর সামশুদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়; তিনি ৩ বছর কারাভোগ করেন, জেল থেকে মুক্তি পাবার পর ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং পটিয়া থানা আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৮০ খ্রিস্টাব্দে সম্মেলনে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাকশাল চট্টগ্রাম দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং ৮৮ খ্রিস্টাব্দে সভাপতি হন। সামশুদ্দিন ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে পটিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন; ৯৭ খ্রিস্টাব্দে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলে তিনি আহবায়ক নিযুক্ত হয়ে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত উক্ত দায়িত্ব পালন করেন।

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক